সাইফুল ইসলাম সানি: দীর্ঘ ২৭ দিন বিনাদোষে কারাভোগের পর অবশেষে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন কলেজছাত্র বাবুল হোসেন নয়ন। আজ বুধবার দুপুরে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সখীপুর থানা আমলী আদালতে নয়নের জামিনের আবেদন করলে বিচারক আকরামুল ইসলাম তার অস্থায়ী জামিন মঞ্জুর করেন। নয়নের আইনজীবী মো. সেলিম আল দীন ও মো. রফিকুল ইসলাম শুনানিতে অংশ নেন। আইনজীবী মো. সেলিম আল দীন সাংবাদিকদের জানান, মামলার চার্জশীট আদালতে না আসা পর্যন্ত আদালত নয়নকে অস্থায়ী জামিন দিয়েছেন। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে কারাগার থেকে নয়ন মুক্তি পান।

পুলিশ ও নয়নের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সখীপুর উপজেলার প্রতিমা বংকী গ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে ও সরকারি মুজিব কলেজ থেকে চলতি ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষার্থী বাবুল হোসেন নয়ন। এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় বাদীর ভুল ঠিকানা ও ভিকটিমের ভুল সনাক্ত করণের কারণে গত ২৭ সেপ্টেম্বর পুলিশ নয়নকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। কিন্তু পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে আসে গ্রেপ্তার হওয়া নয়ন মামলার প্রকৃত আসামি নন। পরে পুলিশ প্রকৃত আসামি বাসাইল উপজেলার নূহু মিয়ার ছেলে নয়ন মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। প্রকৃত আসামি গ্রেপ্তার হওয়ার পরও আইনি জটিলতায় নির্দোষ নয়নের জামিন বিলম্বিত হচ্ছিল। বিনাদোষেই সে ২৪ দিন ধরে কারাবন্দি ছিল। এ নিয়ে গত ২১ অক্টোবর দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রিয়দেশ পাতায় ‘এক নয়নের সাজায় অন্য নয়ন জেলে’ শিরোনামে এবং দৈনিক বাংলাদেশের খবরের ৬ -এর পাতায় ‘বিনাদোষে কারাভোগ করছে নয়ন’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ দু’টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। পরেরদিন আরো বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিক ও টেলিভিশনেও নির্দোষ নয়নকে নিয়ে সংবাদ প্রচার হয়। পরে আজ বুধবার আদালত নয়নকে অস্থায়ী জামিন দিয়ে কারাগার থেকে মুক্ত করেন।
নয়নের বাবা শাহজাহান আলী বলেন, দীর্ঘদিন পর হলেও আমার ছেলে জেল থেকে মুক্ত হয়েছে। এ কথা বলেই তিনি আবেগ আপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এদিকে নয়নের মুক্তির খবর শুনে সন্ধ্যায় স্থানীয়রা নয়নের বাড়িতে এসে ভিড় করতে থাকে। তারা বিপদগ্রস্ত পরিবারটির পাশে দাড়ানোর জন্য সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানান।
এসবি/সানি