অনলাইন ডেস্ক: অভিজ্ঞতার ঝুলিতে ছিল মাত্র একটি ওয়ানডে। তবু ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়ে যান সৌম্য সরকার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মাত্রই পা রাখা তরুণ ক্রিকেটারকে নেওয়ার কারণ ছিল, অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি তার পেস বোলিংয়ের সুবিধা পাওয়া। যদিও পরবর্তী সময়ে সৌম্যকে শুধু ব্যাটসম্যানের ভূমিকাতেই পাওয়া গেছে। গত কিছুদিন এই দৃশ্যের পরিবর্তন এসেছে। এখন প্রায়ই বোলিংয়ে দেখা যাচ্ছে তাকে। সাফল্যও পাচ্ছেন। সর্বশেষ যেটা দেখা গেছে বঙ্গবন্ধু বিপিএলে।
বিপিএলে ব্যাটিং-বোলিংয়ে ভালো করেছেন সৌম্য। ১২ ম্যাচে ৩৩.১০ গড়ে ৩৩১ রানের পাশাপাশি মিডিয়াম পেসে নিয়েছেন ১২টি উইকেট। ব্যাট-বলে ভালো করে পাকিস্তান সফরে গিয়েছিলেন সৌম্য। কিন্তু দুই বিভাগের কোনোটাতেই সফল হতে পারেননি তিনি। দুই ম্যাচে ৭ রানের সঙ্গে উইকেটের ঘর ফাঁকা।
অলরাউন্ডার হতে গিয়ে ব্যাটিং ভুলে যাচ্ছেন না তো সৌম্য? ২৬ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার অবশ্য তা মনে করেন না। একটিতে ব্যর্থ হলে অন্যটিতে ভালো করার দায়িত্ব নিতে চান তিনি, ‘আমার জন্য ভালো হবে (অলরাউন্ডার ভূমিকা)। আগে এক সাইড নিয়ে চিন্তা করতাম, এখন দুই বিভাগ নিয়ে করি। আগে ব্যাটিং খারাপ হলে পুরো দিনটাই মাটি হয়ে যেত। কিন্তু এখন ব্যাটিং খারাপ হলে বোলিং দিয়ে পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। আবার বোলিং খারাপ হলে ব্যাটিং দিয়ে পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। সব মিলিয়ে ডাবল রোলে আমার সুযোগটা বেশি।’
পাকিস্তানে টেস্টের আগে কোনো প্রস্তুতি ম্যাচ নেই। অনুশীলনই শেষ ভরসা। সেজন্য তড়িঘড়ি করে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ (বিসিএল)। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে নামার আগে বিসিএলে একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। সৌম্য এই টুর্নামেন্টকে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে নিচ্ছেন, ‘অনুশীলন করে গেলে অবশ্যই ভালো হয়। যেহেতু জাতীয় দলের সবাই পাকিস্তানে যাবে, তার আগে যেন সবাই একটি ম্যাচ খেলে। অনুশীলন কম হচ্ছে, এরপরও ম্যাচ অনুশীলনে অন্য রকম একটা ব্যাপার থাকে।’
বিসিএলে এবার ওয়ালটন মধ্যাঞ্চলের হয়ে খেলবেন সৌম্য। তিনি ছাড়াও এই দলে রয়েছেন জাতীয় দলের মোহাম্মদ মিঠুন, মোস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। এই দল নিয়ে ট্রফি জেতার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী সৌম্য, ‘দল অনুযায়ী ভালো খেলতে পারলে ট্রফি জেতা সম্ভব। আমাদের দলটি ভারসাম্যপূর্ণ। এখানে লম্বা সময় খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন খেলোয়াড় আছে। আশা করি সবাই মিলে ভালো ফল আনতে পারব।’
২৬ বছর বয়সী সৌম্য ব্যাটিং করেন বাঁ হাতে এবং বোলিং করেন ডান হাতে। টেস্টে তার অভিষেক হয় ২০১৫ সালের এপ্রিলে খুলনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে। ১৫ টেস্টে তিনি ৮১৮ রান করেছেন, বল হাতে পেয়েছেন ৩ উইকেট। ওয়ানডেতে তার অভিষেক ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ঢাকায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ওয়ানডেতে সৌম্য ৫৫ ম্যাচে ১৭২৮ রান করেছেন, উইকেট পেয়েছেন ৯টি। টি- টোয়েন্টিতে তার অভিষেক হয় ২০১৫ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানের বিপক্ষে। টি-টোয়েন্টিতে তিনি ৪৮ ম্যাচে ৮০৩ রান করেন আর উইকেট লাভ করেন ৬টি। ব্যাটিংয়ে নেমে চমৎকার শুরুর পর খুব বাজে শট খেলে আউট হয়ে যাওয়া তার চরিত্রে পরিণত হয়ে গেছে। সবার আগে সেটাই বদলাতে হবে। একটু ঠান্ডা মেজাজে খেলতে পারলে সব ধরনের ক্রিকেটে তিনি বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ে পরিণত হতে পারেন। নিউজ সূত্র: বাংলাদেশের খবর