মো. আমিনুর রহমান:

আমরা ভুল থেকে কখনো শিক্ষা নেই না; আবার ভুল স্বীকার করার ইচ্ছা শক্তি বা প্রবনতাও নাই।
ভুল করলে যেমন ভুল স্বীকার করতে হয় না; আরও জোর গলায় তাদের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করা হয়। আসলে যারা তথাকথিত শক্তিশালী তাঁদের পক্ষে সবসময় ভাগ্য বিধাতা থাকেন।
বঙ্গবন্ধু আমার দেখা নয়া চীনে বলেছিলেন; চীনে দুর্নীতি করলে লোকজন দুর্নীতিবাজদের মুখে থু থু দেয়। কি রাজনীতিবিদ ও কি সরকারি কর্মচারি…. দুর্নীতি করলে শাস্তি হয়। এমন কি মাও সে তুং -এর কাছের একজন যোদ্ধাকেও দুর্নীতির জন্য ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলতে হয়েছিল।
বইতে উল্লেখ আছে, চীন সরকার সাধারণ জনগনকে বিশ্বাস স্থাপন করতে পেরেছিল যে, রাষ্ট্র জনগনের। জমি জনগনের, অর্থ জনগনের, অবকাঠামো জনগনের (যদিও মালিকানা কিছু কিছু ছিল কিন্তু শর্ত সাপেক্ষে)। সকলেই খুশি ছিল। চীনারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল এবং পরস্পর পরস্পরকে সাহায্য করত।
কিন্ত অভাগা এদেশে কেউ কোন কথা শোনে না। এত আইন আছে কিন্ত বেশির ভাগই প্রয়োগ নাই। চীনে সেসময় অল্প কয়েক দিনের মধ্যে বেশ্যাবৃত্তি বন্ধ করেছিল। বঙ্গবন্ধু যখন চীনের দোভাষীকে জিজ্ঞাসা করল, কিভাবে বেশ্যাবৃত্তি বন্ধ করতে পারল?
প্রতিউত্তরে চীনা দোভাষী বলল, আইন করে নয়, তাদেরকে পুনর্বাসন (কমিটি কর্তৃক গনিকাবৃত্তি কাজে নিয়োজিত মেয়েদেরকে motivated করার মাধ্যমে) করার মধ্য দিয়ে এই কাজটি সম্পাদন করতে পেরেছে।
ঘটনাটি আজ থেকে প্রায় ৬৭ বছর আগের কথা। তখন চীন নামক রাষ্ট্র কেমন ছিল! কত উন্নত ছিল তাদের চিন্তা ও কাজ। শুধু দেশপ্রেম আর দেশপ্রেম। দেশপ্রেম আজ চীনকে পরিনত করেছে পরাশক্তিময় রাষ্ট্রে। ঈমান, বিশ্বাস, পরিশ্রম, ন্যায়, দৃঢ়তা, আত্মবিশ্বাস এবং দূরদৃষ্টি কিভাবে একটি রাষ্ট্রকে এগিয়ে নেয়; তার দৃষ্টান্ত চীন।
আর আজ আমরা মোসাহেবী, চাটুকার, অন্যায় কাজ করে পার পেয়ে যাচ্ছি। আমাদের ঈমান দূর্বল, যার দরুন সর্বদা কিভাবে একে অপরে blame দেয়া যায়; সে চেষ্টায় থাকি অর্থাৎ নিজেদেরকে blame game এর ক্রীড়ানকে পরিনত করেছি।
শুধু এদেশে একমাত্র নিয়মটাই ব্যতিক্রম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা সংখ্যাটা যেন জ্যামিতিক হারে না বেড়ে সহনশীল পর্যায় থাকে।
আমরা যেন ঘরে অবস্থান করি, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখি আর নিজেকে ও অপরকে নিরাপদ রাখি।
-লেখক: সিনিয়র সহকারী সচিব ও সাবেক ইউএনও সখীপুর, টাঙ্গাইল।
–এসবি/সানি