
- সাইফুল ইসলাম সানি: ১৬ এপ্রিল দাড়িয়াপুর ও গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর প্রার্থীরা ভোট প্রত্যাশায় নতুন করে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন। পোস্টার ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে অলিগলি। মিটিং মিছিল ও সমাবেশে মুখর হয়ে ওঠেছে দুই ইউনিয়নের পাড়া মহল্লা। চা স্টলগুলোতে রাতভর চলছে নির্বাচনী হিসাব নিকাশ। চায়ের কাপে ঝড় তুলছেন কৃষক শ্রমিক জেলে থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন। এ যেনো এক অন্য রকম উৎসবের আমেজ। সময় যত ঘনিয়ে আসবে দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও প্রচারণায় যোগ দিবেন বলে কর্মী সমর্থকরা জানিয়েছেন।
দুই ইউনিয়নে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, দু’টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ও বিএনপির ছয়জন ও একজন সতন্ত্র প্রার্থীসহ সাতজন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দাড়িয়াপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনছার আলী আসিফ (নৌকা প্রতীক), কৃষক শ্রমিক জনতালীগের মনোনয়ন পেয়েছেন দলটির উপজেলা কমিটির সহ-সভাপতি সানোয়ার হোসেন মাস্টার (গামছা প্রতীক) এবং বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির সদস্য কবির হাসান (ধানের শীষ প্রতীক)। অন্যদিকে গজারিয়া ইউনিয়নে আওয়মী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন টাঙ্গাইল জেলা শ্রমিক লীগের সদস্য আবদুল মান্নান (নৌকা প্রতীক), কৃষক শ্রমিক জনতালীগের ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি বাদল মিয়া (গামছা প্রতীক) এবং বিএনপি থেকে গজারিয়া ইউনিয়ন কমিটির সদস্য গোলাম মোস্তফা (ধানের শীষ প্রতীক) এবং সতন্ত্র প্রার্থী মফিজুল ইসলাম (আনারস প্রতীক)। দুই ইউনয়নের কোনোটিতেই শীর্ষ রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। তাই দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও নিঃসংকোচে নিজ নিজ দলের প্রার্থীর হয়ে প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন। এ কারণে প্রচারণা উৎসবে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। চেয়ারম্যান প্রার্থী ছাড়াও ভোটের মাঠ জমিয়ে রেখেছেন ইউপি সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদ প্রার্থীরা। তারা দিন-রাত নিজ নিজ এলাকায় প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। সংরক্ষিত মহিলা আসন ও সাধারণ সদস্য প্রার্থীদের মধ্যে প্রচারণায় তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা লক্ষ্য করা গেছে। দাড়িয়াপুর ইউনিয়নে সংরক্ষিত ১নং আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন- মোছা. লাভলী বেগম (সূর্যমূখী প্রতীক), লাইজু আক্তার (তালগাছ প্রতীক), ছাবিনা আক্তার (হেলিকপ্টার প্রতীক) ও বীনা বেগম (মাইক প্রতীক)। ওই ইউনিয়নের ২নং মহিলা সংরক্ষিত আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন- ফাতেমা আক্তার লাবনী (তালগাছ), নাজমা বেগম (সূর্যমূখী) ও লাল বানু (বক প্রতীক)। সংরক্ষিত ৩নং ওয়ার্ডে কহিনুর আক্তার (মাইক প্রতীক), পারভীন আক্তার (বই প্রতীক), রিতা আক্তার (সূর্যমূখী প্রতীক) এবং পারুল আক্তার তালগাছ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়াও দাড়িয়াপুর ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে ৪১জন সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
অন্যদিকে গজারিয়া ইউনিয়নে ১নং সংরক্ষিত মহিলা আসনে হামিদা আক্তার (তালগাছ প্রতীক), শিউলী আক্তার (বক প্রতীক) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২নং সংরক্ষিত আসনে জমেলা খাতুন (তালগাছ প্রতীক), নীলুফা ইয়াসমিন (বক প্রতীক), ফিরোজা মমিুদ (কলম প্রতীক) এবং ৩নং সংরক্ষিত আসনে বকুল আক্তার (বক প্রতীক), সুলতানা তাহেরা আক্তার (কলম প্রতীক) এবং রুমী আক্তার তালগাছ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়াও আরও অর্ধ্ব শতাধিক সাধারণ সদস্য প্রাথী বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
দাড়িয়াপুর ইউনিয়নে মোট ভোটার ১৭ হাজার ২৫৩ জন। এদের মধ্যে ৮ হাজার ২৩৮ জন পুরুষ ও ৯ হাজার ৫৫ জন নারী ভোটার।
গজারিয়া ইউনিয়নে মোট ভোটার ১২ হাজার ২৭৬ জন। এদের মধ্যে ৫ হাজার ৯২১ জন পুরুষ ও ৬ হাজার ৩৫৫ জন মহিলা ভোটার।
দাড়িয়াপুর ইউনিয়নের প্রতিমা বংকী গ্রামের বাসিন্দা প্রবীণ ব্যক্তি নয়ন উদ্দিন বলেন, ‘শেষ বয়সে দায়িত্বশীল একজন মানুষকে চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চাই। যে ইউনিয়নের উন্নয়নের কথা চিন্তা করবে আমরা তাকেই ভোট দেব।’
একই গ্রামের মহিলা ভোটার মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস পেলে আমরা ভোট দিতে যাব এবং গরীব, দুঃখী মানুষের খোঁজ খবর রাখেন এমন লোককেই ভোট দেব।’
ওই দুই ভোটারের মত সাধারণ ভোটারদেরও একই অভিমত গত পাঁচ বছরে সুখে-দুঃখে যাকে পাশে পেয়েছেন তাকেই তাঁরা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।