নিজস্ব প্রতিবেদক: সখীপুরে এক কলেজছাত্রীকে সাত মাস আটকে রেখে ধর্ষণের ঘটনায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে এলাকাবাসী। ধর্ষকের বিচার দাবিতে বুধবার বিকেলে রতনপুর কাশেম বাজার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে স্থানীয়রা। মিছিলে কয়েক’শ নারী-পুরুষ ও শিক্ষার্থী অংশ নেন। মিছিল থেকে লম্পট ধর্ষক বাদল মিয়ার ফাঁসির দাবি জানিয়ে স্লোগান দেওয়া হয়। এদিকে আগামি শুক্রবার সকালে ঢাকা-সখীপুর-গোড়াই সড়কের আমের চারা এলাকায় মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বুধবার সকালে ঘটাস্থল পরিদর্শন করে নির্জন ঘরটিতে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে তাদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। এ সময় বিপুল সংখ্যক এলাকাবাসী ভিড় জমান।
বুধবার বিকেলে সরেজমিনে রতনপুর কাশেম বাজার গ্রামে গেলে নির্জন ও পরিত্যক্ত ঘরটিকে ঘিরে উৎসুক জনতার ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ঘরের সামনে এলাকার প্রায় দুই শতাধিক নারী-পুরুষ কলেজছাত্রীকে পাশবিক ও নিষ্ঠুর নির্যাতনের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। এ সময় তারা ধর্ষক বাদলের প্রতি ঘৃণা ও নিন্দা জানানোর পাশাপাশি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানান। যে ঘরটিতে কলেজছাত্রীকে আটকে রাখা হয়েছিল সেটি টিনশেড। তাতে নেই কোনো বিদ্যুৎ, পানির ব্যবস্থা। বাথরুমটিও অসম্পন্ন। ওই ঘরের জানালা দিয়ে দেখা যায়, বাথরুমের মেঝেতে একটি কম্বল বিছানো। পাশে বেশ কিছু পানি ও কোমলপানীয় খালি বোতল। ওই রুমটিতেই নোংরা পরিবেশে প্রায় সাত মাস মানবেতর জীবন কাটে কলেজছাত্রীর।
মেয়েটির বাবা আবেগজড়িত কন্ঠে জানান, আমার মেয়েকে ওই লম্পট ঠিকমত খেতে দেয়নি। কয়েকদিন পরপর রাতের বেলায় শুকনো খাবার ও পানি দিয়েছে মাত্র। সর্বশেষ গত ২৯ জুন এবং ২৯ জুলাই পলিথিনে করে ভাত দেওয়া হয়েছিল। মেয়েটিকে খাবারের সঙ্গে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাওয়ানো হতো। সে নেশায় অচেতন থাকতো। শরীর দুর্বল হয়ে পড়ায় সে কথা বলতে পারতো না। মেয়েটির বাবা আরও জানান, বাদল আমার মেয়েকে আশ্বস্ত করতো যে প্রেমিকের সঙ্গেই তার বিয়ের ব্যবস্থা করা হবে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সখীপুর খথানার উপ-পরদির্শক মো. মোতালেব হোসেন বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ওই ঘরটিতে তালা ঝুলিয়ে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
অভিযুক্ত বাদল মিয়া গতকাল বুধবার মুঠোফোনে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই মেয়ের ভাই সুমনকে বিদেশ পাঠানোর জন্য আমার নামে লোন করে টাকা দেই। তারা ওই টাকা পরিশোধ না করায় আমার নামে মামলাও হয়েছে। টাকার চাপ দেওয়ায় মেয়েটি তার বাবার কথামত আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করছে।