26.7 C
Dhaka
Wednesday, August 20, 2025

জুলাই ঘোষণা হতে হবে ঐক্যমতের ভিত্তিতে – আহমেদ আযম খান

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আহমেদ...

সখীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলের সখীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে জুয়েল রানা (২৫)...

সখীপুরে ছেলের চোখের সামনে মাকে হত্যা করে পালিয়েছে বাবা

জাহিদ হাসান: টাঙ্গাইলের সখীপুরে ছেলের চোখের সামনে...

কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছেনা বাল্যবিবাহ

জাতীয়কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছেনা বাল্যবিবাহ

সাইফুল ইসলাম সানি: কনে উপজেলার একটি দাখিল মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। গত ২৭ সেপ্টেম্বর তার বিয়ের আয়োজন করে পরিবার। স্থানীয় এক ইউপি সদস্য ছিলেন বিয়ের তত্ত্বাবধানে। খবর পেয়ে সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আলম বিয়েটি বন্ধ করে দেন। সাময়িক বন্ধ রাখা হয় সব আয়োজন; কিন্তু কিছুদিন পরই ওই শিক্ষার্থীকে গোপনে বিয়ে দেওয়া হয়।

একটি বিদ্যালয়ের  অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে প্রতিবেশী এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক। সম্প্রতি ওই যুবক তাঁর প্রেমিকা ছাত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যান। স্থানীয় এক সাংবাদিকের সহযোগিতায় পূর্ণিমার মা এ নিয়ে থানায় অভিযোগও করেন। পরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যানের পৃষ্ঠপোষকতায় পারিবারিক সমঝোতায় তাঁদের বিয়ে হয়। —এই দুটি ঘটনাই বাস্তব এবং সত্য।

টাঙ্গাইলের সখীপুরে কন্যাশিশুর নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় সরকারি-বেসরকারি নানা উদ্যোগের পরও নীরবে-নিভৃতে হচ্ছে একের পর এক বাল্যবিবাহ। এসব ঘটনা গোপনে সংঘটিত হয় বলে বাল্যবিবাহের হিসাব নেই সরকারি-বেসরকারি কোনো সংস্থার কাছে।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফিরোজা আক্তার এ প্রতিবেদককে জানান, চলতি বছর তাঁরা ২৫ থেকে ৩০টি বাল্যবিবাহ ঠেকিয়েছেন। কয়েক বছর ধরে ইন্টারনেট ব্যবহারযোগ্য মোবাইল ফোন শিক্ষার্থীদের হাতে হাতে দেখা যাচ্ছে। ইন্টারনেটের অবাধ ব্যবহারের ফলে অল্প বয়সেই প্রেম ও শারীরিক সম্পর্কের দিকে ঝুঁকছে শিক্ষার্থীরা। তাই অনেক সময় অভিভাবকেরা নিরুপায় হয়েও বাল্যবিবাহ দিতে বাধ্য হন। এই কর্মকর্তা মোবাইল ফোন আসক্তিকে মাদকের চেয়েও ভয়াবহ বলে উল্লেখ করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলায় এনজিও সংস্থা ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি প্রোগ্রামটি চালু নেই। তবে গত ১৫ সেপ্টেম্বর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রথম দিন ৪১ জন মেয়ে শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা জানান, ৪১ জন মেয়ে শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৯ জনের বাল্যবিবাহ হয়েছে এবং ২ জন অসুস্থ। তাঁরা আরও জানান, এখন আর অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, নারীর সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কারণে বাল্যবিবাহ তেমন একটা হচ্ছে না। অধিকাংশ বাল্যবিবাহ ছেলে-মেয়ের ইচ্ছাতেই হচ্ছে। অনেক সময় ছেলেমেয়েদের হুমকিতেও অভিভাবক বাল্যবিবাহ দিতে বাধ্য হন। প্রশাসন দুই-একটি বাল্যবিবাহ ঠেকিয়ে দিলেও অনেক ক্ষেত্রে রাতের বেলায় শেষ করা হয় বিয়ের আয়োজন।

বাল্যবিবাহের শিকার গড়গোবিন্দপুর উদয়ন উচ্চবিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর চাচা বলেন, ‘গোপনে বিয়ে হয়েছে। ওই সময় ছেলের বাবা বলেছিলেন, আমরা মেয়েকে পড়াশোনা করাব। এখন মেয়েটির স্বামী পড়াতে চায় না। এ কারণেই ওই ছাত্রী গত এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি।’

এদিকে উপজেলার একাধিক নিকাহ রেজিস্ট্রারের (কাজী) সঙ্গে কথা হলে তাঁরা বাল্যবিবাহ রেজিস্ট্রি করেন না বলে জানান। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কলেজশিক্ষক জানান, আইনি ঝামেলা এড়াতে অনেক কাজী বাল্যবিবাহের তথ্য মূল রেজিস্ট্রি খাতায় না তোলে পৃথক খাতায় লিখে রাখেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আলম বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতসহ কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে কাজ করলেও পুরোপুরি থামানো যায়নি। এর কুফল সম্পর্কে অভিভাবকদেরই প্রথম সচেতন হতে হবে। বাড়াতে হবে সামাজিক সচেতনতাও।

বার্তা ডেস্ক

Check out our other content

Check out other tags:

Most Popular Articles