এম সাইফুল ইসলাম শাফলু: সখীপুরের শোলাপ্রতিমা দাখিল মাদরাসা থেকে চলতি দাখিল পরীক্ষার্থী মো. জিন্নাত আলী। বাবা সাহেব আলী দিন মুজুরের কাজ করে কোন রকম পরিবারের আহার যোগাতেন। তিন ভাই-বোনের মধ্যে জিন্নাত আলীই বড়। জিন্নতের পরিবারে দিন মুজুর বাবা ছাড়া আর কোন উপার্জনক্ষম ব্যাক্তি না থাকায় অভাব অনটনের মধ্যে দিয়েই চলছিল তাদের সংসার। ২০১৪ সাল জিন্নত আলী অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। বাবাকে সহায়তা করতে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ১৫’শ কোয়েলের বাচ্চা দিয়ে বাড়ির আঙ্গিনায় ২ শতাংশ জমির উপর গড়ে তুলেন কোয়েল পাখির খামার। মাত্র আড়াই বছরের মাথায় তাঁর খামারে কোয়েল পাখির সংখ্যা এখন ৬ হাজারেরও বেশি। চলতি দাখিল পরীক্ষা শেষে কোয়েলের বাচ্চা ফোটানোর হ্যাঁচারী করার পরিকল্পনা আছে জিন্নাত আলীর। উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, কোয়েল চাষে স্বপ্ন পূরণ
[শেষ পৃষ্ঠার পর] কোয়েলের খামারে কোন দুর্গন্ধ নেই। তাই এটি পরিবেশ বান্ধব। কোয়েলের নিজস্ব কোন খাবার না থাকলেও বাজারে পাওয়া পোল্ট্রির খাবার দিয়েই কোয়েল পালন করা যায়। বাজারে দুই জাতের কোয়েল পাখি থাকলেও লেয়ার জাতের কোয়েল পাখি ৪২-৪৫ দিনের মধ্যেই ডিম দেয় এবং টানা ১৮ মাস ডিম দিয়ে থাকে। অপর দিকে ব্রয়লার জাতের কোয়েল যা ২৮ দিনের মধ্যে বিক্রির উপযোগী হয়। জিন্নাত আলী জানায়, ২০১৪ সালে আমি তখন অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। অভাবের কারণে আমার ও ছোট ভাইয়ের লেখা পড়া প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। বাবার কষ্টের দিকে চেয়ে এনজিও থেকে ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ১৫’শ বাচ্চা দিয়ে বাড়ির আঙ্গিনায় কোয়েল পাখির খামার শুরু করি। লেখাপড়া শেষে বিশ্রামের পরিবর্তে বাকি সময়টা খামারের পরিচর্যায় কাটাই। আমার ও আমার ভাইয়ের লেখাপড়ার ও পরিবারের খরচ মিটানোর পর অবশিষ্ট টাকা দিয়ে আড়াই বছরের মাথায় আমার খামারে কোয়েল পাখির সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়িয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ৫ হাজার কোয়েল পাখি ডিম দেয়। কোয়েল পাখি ও ডিম বিক্রি করে প্রতি মাসে তাঁর প্রায় ৫০ হাজার টাকা আয় হয় বলেও সে জানায়। জিন্নাতের বাবা সাহেব আলী বলেন, অভাবেব সংসারে আমার ছেলে জিন্নত আলী তার লেখা পড়ার পাশাপাশি কোয়েল চাষে করে সংসারের অভাব ঘুচিয়েছে । উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ এস এম উকিল উদ্দিন বলেন, কোয়েলের মাংস ও ডিম সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। কোয়েলের ডিম ও মাংসে কোলেস্টেরল কম থাকায় ডাক্তাররা রোগীর পথ্য হিসেবেও কোয়েলের মাংস ও ডিম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তিনি আরও বলেন, কোয়েল চাষে কোন ঝুঁকি নেই। মুরগীর ভ্যাকসিন ওষুধ দিয়েই এর চিকিৎসা হয়।