গজারিয়া একটি জনবহুল ইউনিয়ন। ইউনিয়ন পরিষদটিকে আধুনিক হিসেবে গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন এডভোকেট আনোয়ার হোসেন। তিনি এই ইউনিয়নে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আগামী ১৫ জুন এ ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তিনি নির্বাচিত হলে গজারিয়াকে নতুন আঙ্গিকে আধুনিক ও পরিচ্ছন্ন ইউনিয়ন গড়ে তুলবেন। এজন্য তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। তিনি নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। তিনি দলীয় মনোনয়ন পাওযায় ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রীয় সকল স্তরের নেতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। দলের মনোনয়ন আরও চেয়ে ছিলেন তাদের এবং সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীসমর্থক নিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট প্রার্থনায় ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাবেন বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে সখীপুর প্রেস ক্লাব কার্যালয়ে একান্ত সাক্ষাতকারে এ প্রতিবেদককে এ কথা জানান চেয়ারম্যান প্রার্থী এডভোকেট আনোয়ার হোসেন। এডভোকেট আনোয়ার হোসেন গজারিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, টাঙ্গাইল জেলা বার সমিতির সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক, জেলা বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবি পরিষদের সদস্য এবং জেলা জজ কোর্টের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর। আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অবতীর্ণ হয়েছেন। তিনি জনগণের ভোটে চেয়ারম্যন নির্বাচিত হলে কি ধরণের উন্নয়নে কাজ করবেন এ প্রতিবেদকের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনায় উঠে আসে এ ইউনিয়ন নিয়ে তার নানা পরিকল্পনা। ইউনিয়নকে আধুনিক শহরে রূপান্তর করতে তিনি প্রথমে কোন বিষয়ে গুরুত্ব দেবেন এমন প্রশ্নের উত্তরে জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার গ্রাম হবে শহর এই ঘোষণার বাস্তবায়ন করতে চান। এ জন্যে ইউনিয়নের জনগুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি কাঁচা রাস্তা পাকাকরণের উদ্যোগ নিবেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা জোয়াহেরুল ইসলামের সহযোগিতায়। তিনিও যেমন এমপি হওয়ার আগে ও পরে বলে আসছেন বাসাইল-সখীপুরকে নতুন আঙ্গিকে, নতুনভাবে সাজাবেন; এবং সে লক্ষ্যে ব্যাপকভাবে উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। আমিও এমপি মহোদয়ের সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে চাই; গজারিয়া ইউনিয়নকে নতুন আঙ্গিকে, নতুনভাবে সাজাবো। এছাড়াও সাধারণ নাগরিকদের মতামতকেও গুরুত্ব দিয়ে কর্ম পরিকল্পনা সাজানো হবে। সবক্ষেত্রেই সমৃদ্ধ করবো ইউনিয়নকে। প্রতিটি ওয়ার্ডে মানুষের দোর গোড়ায় সেবা পৌঁছে দিব। তিনি বলেন, রাস্তা পাকা করার জন্য বিশেষ করে বাঘবেড় হতে ইছাদিঘী পর্যন্ত ৩ কি.মি. রাস্তা, ইছাদিঘী উত্তরপাড়া ৪’শ মিটার সংযোগ সড়ক, কামারপাড়া হতে গজারিয়া ভায়া জয়বাংলা পর্যন্ত প্রায় ৪কি.মি. সড়ক, কালিয়নপাড়া হতে কালিদাস দেড় কি.মি. সড়ক, বটতলা হতে আতিয়াপাড়া পর্যন্ত ২কি.মি. সড়ক, কালিয়ানপাড়া হতে গজারিয়া সড়ক, আতিয়াপাড়া হতে রায়হান মার্কেট ভায়া হালিম স্যারের বাড়ি পর্যন্ত আড়াই কি.মি সড়ক জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা জোয়াহেরুল ইসলামের সহযোগিতায় পাকাকরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এছাড়াও প্রতিটি এলাকার গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক সড়কগুলো ইট সলিং করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্যদিকে, ইছাদিঘী দাখিল মাদ্রাসা, গজারিয়া শান্তিকুঞ্জ একাডেমিক উচ্চ বিদ্যালয়, ইছাদিঘী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে একাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য এমপি মহোদয়ের মাধ্যমে উদ্যোগ নেওয়া হবে। এলাকার মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির ও হাটবাজারের উন্নয়ন করা হবে। তিনি বলেন, আমি একজন আইনজীবি, এ পেশাও সেবামূলক। আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে উন্নয়ন ধারাকে অব্যাহত রাখতে গজারিয়া ইউনিয়নকে ঘুষ-দুর্নীতি মুক্ত রাখা। মাদক-সন্ত্রাস, বাল্য
বিয়ে, ইভটিজিং, জঙ্গিবাদ মুক্ত রাখা এবং সর্বোপরি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন। উন্নয়ন কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় জনগণকে তাদের চাহিদার আলোকে সেবা নিশ্চিত করবো। এ ক্ষেত্রে নাগরিকদের মতামতকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে।
সখীপুরের মধ্যে গজারিয়া ইউনিয়ন অধিক পরিচিত, গজারিয়া নিয়ে আপনার আরও কি স্বপ্ন আছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, জনবান্ধব, পরিচ্ছন্ন, পরিবেশবান্ধব, আলোকিত, উন্নত নাগরিক জীবন গড়ে তোলার জন্য রাস্তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে নিরিবিলি শহরের রূপ ধরে রাখা হবে। ইউনিয়নের আধুনিকতা এক সময় দেশে আলো ছড়াবে এ স্বপ্ন আমাকে মোহিত করছে। নাগরিকের মানবিক উন্নয়নে পরিকল্পনা কি? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান,
ইউনিয়নের সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী, শিক্ষার্থী, মুক্তিযোদ্ধা ও বয়স্ক নাগরিকদের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও বিনোদন চর্চায় নাগরিকদের সমন্বয়ে একটি পরিচালনা পরিষদ গঠনের মধ্য দিয়ে নাগরিক কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। এছাড়া এলাকাভিত্তিক লাইব্রেরি, সংস্কৃতির বিকাশ ও চর্চাকেন্দ্র তৈরিতে গুরুত্ব দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, বিভিন্নশিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, উপাসনালয়, এতিমখানা, মেধাবী ছাত্রছাত্রী, গুণীজনদের সম্মাননা দেয়া হবে। তিনি বলেন, উন্নত ও সুন্দর জীবনের জন্য সবার আগে প্রয়োজন নিরাপদ স্বাস্থ্যসম্মত ইউনিয়ন। ইউনিয়নে স্যানিটেশন ব্যবস্থার প্রতি ব্যাপক জোর দেওয়া হবে। ইউনিয়নে একটি ফরমালিন মুক্ত ও নিরাপদ বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন বাজারের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া হবে। এডভোকেট আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রথমেই বলে রাখতে চাই, আমি ইউনিয়নবাসীর সেবক হতে চাই, নাগরিকদের বন্ধু হতে চাই। আধুনিক ইউনিয়ন বিনির্মাণে আমি নাগরিকদের সহযোগিতা বেশি পেতে চাই। আমাদের সেতু হবে আন্তরিকতার বন্ধনে। বর্তমান সরকার ডিজিটালে গুরুত্ব দিচ্ছে, আপনার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অন্যতম একটি দিক ডিজিটাল, ডিজিটাল ইউনিয়ন গঠনে কি পরিকল্পনা আপনার? এমন প্রশ্নের উত্তরে জানান, ইউনিয়নের জন্য সরকারের যত ধরণের ই-সেবা চালু আছে তার সঠিক বাস্তবায়ন করা হবে। আমার দায়িত্বই হবে জনগণকে সেবা দেয়া। কি কারণে চেয়ারম্যান হওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে জানান, নেতৃত্ব দেওয়ার স্বপ্ন আমার ছোটবেলা থেকেই। কারণ এককভাবে এক-দুইজনকে সহযোগিতা করা যায়। কিন্তু একটি গোষ্ঠী বা একটি বৃহত্তর জনপদের সেবায় কাজ করতে হলে নেতৃত্ব প্রয়োজন। তৃণমূলে কাজ করে সে ভালোবাসা আমি সব সময় পেয়ে এসেছি। এই গজারিয়ার সন্তান হিসেবে ইউনিয়নবানীর সুখে-দুঃখে সর্বদা পাশে থেকেছি। জনগণের ভালোবাসা ও ভোটে আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে আরও সেবা করার সুযোগ পাবো। ইউনিয়নবাসীর জন্য নিজেকে উৎসর্গ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী এডভোকেট আনোয়ার হোসেন। তিনি ইউনিয়নের দলমতনির্বিশেষে সকল পর্যায়ের ভোটারদের কাছে দলীয় প্রতীক নৌকা মার্কায় আগামী ১৫ জুন একটি করে ভোট দিয়ে তাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করার জন্য ভোট প্রার্থনা করেছেন।
একান্ত সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন সখীপুর বার্তা’র উপ-সম্পাদক মামুন হায়দার: