সাইফুল ইসলাম সানি: করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে ঘরে অবস্থান করা জরুরি। কিন্তু আড্ডাবাজ মন এ বিধি নিষেধ কোনোভাবেই মানতে চায় না। বারবার ছুটে যেতে চায় বাজারের চা এর দোকানে বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দিতে। কিন্তু এবার উপায় নেই, বাঁচতে হলে ঘরে থাকতে হবে। তাই নিজেদের বেমানান করে ঘরে অবস্থান করতে মাথা ন্যাড়া করছেন টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার যুবকরা। যাতে ন্যাড়া মাথা নিয়ে বাজারে যেতে সংকোচ বোধ হয় । ইতোমধ্যে প্রায় অর্ধ শতাধিক যুবক মাথা ন্যাড়া করেছেন। কেউ কেউ আবার নিজেদের ন্যাড়া মাথার ছবি আপলোড দিচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। গত কয়েকদিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাথা ন্যাড়া করার এমন চিত্র নিয়মিত চোখে পড়ছে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনা সংক্রমণরোধে সারা দেশে যখন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে সকলকে বাসা-বাড়িতে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। এই সুযোগে অনেকেই পরিবারের শিশু সদস্যসহ নিজের মাথার চুল ফেলে দিয়ে নীরবে বাসায় অবস্থান করার চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে, মাথা ন্যাড়া হওয়া কেউ কেউ জানিয়েছেন, সরকারি নির্দেশনায় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো সেলুনগুলোও বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন সেলুনে যেতে না পারায় মাথায় চুল বৃদ্ধি পায়। গরমের এ সময়ে চুল বেড়ে গিয়ে মাথায় অনেক সময় চুলকানিও হয়। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতেও কেউ কেউ মাথা ন্যাড়া করেছেন। তবে ন্যাড়া মাথার ছবি নিয়ে অনেকে গুজবও রটাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কিছু ছবি ফেসবুকে ভাইরালও হয়েছে।
এ বিষয়ে সখীপুরের শিক্ষানবিশ আইনজীবী শেখ মুহাম্মদ হাসনাত ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে মাথা ন্যাড়া করার হিড়িক পড়েছে বলে নিউজ প্রচার করেছে। যা প্রকৃতপক্ষে সত্য নয়। এভাবে বিষয়টি গুজব হিসেবে ছড়িয়ে যাচ্ছে।
মাথা ন্যাড়া হওয়া মাইনুল ইসলাম মুক্তা এ প্রতিবেদককে বলেন, আমরা বন্ধুরা মিলে নিজেরা লকডাউন পালন করতে মাথা ন্যাড়া করে ফেসবুকে ফানি পোস্ট দিয়েছি। কিন্তু কিছু নিউজ পোর্টালে আমাদের ছবি ব্যবহার করে বিষয়টি ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। মাথা ন্যাড়া করলেই করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে -এ রকম গুজব আমরা কখনোই বিশ্বাস করি না। ভুল তথ্য দিয়ে নিউজ প্রচার করা ওইসব নিউজ পোর্টালগুলোর তীব্র সমালোচনা করেন তিনি।
এদিকে, স্থানীয় নরসুন্দর কানাই লাল শীল জানান, সরকারি নির্দেশে বাজারের সেলুন এখন বন্ধ রাখা হয়েছে। তাই সংসার চালাতে খুব হিমসিম খেতে হচ্ছে। বাড়ি গিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার জন্য দু-একজন ফোন দিচ্ছেন। পরিচিত মানুষ হলে তাদের বাড়িতে গিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দিয়ে আসছি।
-এসবি/সানি