নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম বলেছেন, কর্মহীন অসহায়দের খাদ্য সহায়তা এবং মানুষের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছে। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বর্তমানে এটাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। ইতোমধ্যে মঙ্গলবার বিকাল থেকে টাঙ্গাইল জেলাকে লকডাউনের আওয়তায় আনা হয়েছে।
ডিসি বলেন, অদৃশ্য শক্তির সাথে বিশ্ব আজ যুদ্ধ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ও টাঙ্গাইল জেলার মানুষ দুশ্চিন্তাগ্রস্থ। করোনা প্রতিরোধে সরকারের নিদের্শনায় জেলার ১২ টি উপজেলায় আমরা নিরলসভাবে কাজ করছি। প্রায় ৪১ লক্ষ মানুষের টাঙ্গাইল অন্যান্য জেলা থেকে ঐতিহ্যবাহী, ইতিহাস সমৃদ্ধ এবং সচেতন।
করোনায় মোকাবেলায় ইতোমধ্যে সরকারের বরাদ্দকৃত ২৪ লক্ষ টাকা এবং ৪২৫ মেট্রিকটন চাল সকল উপজেলায় বন্টন করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ সহায়তা চলমান থাকবে। ত্রাণগুলো যেন সঠিকভাবে উপযুক্ত ব্যক্তিরা পান সেদিকে জেলা প্রশাসনের কঠোর দৃষ্টি রয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা জেলার কর্মহীন মানুষের মধ্যে চাল, ডাল, তেল, আলুসহ করোনা প্রতিরোধের সরঞ্জাম বিতরণ করছি। ইতোমধ্যে নির্মাণ শ্রমিক, কুলি, হিজড়া, শীল, যৌন পল্লীতে ও বেদে সম্প্রদায়ের মধ্যে খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। শ্রেনীভিত্তিক এ বিতরণ ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে।
বিত্তশালী ব্যক্তি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের কাছে জেলা ত্রাণ তহবিলে সহযোগিতা চাওয়া হচ্ছে। আমাদের একদিনের বেতন দেড় লক্ষ টাকা আমরা তহবিলে জমা দিয়েছি। এছাড়া টাঙ্গাইল ক্লাব, সিডিসি ক্লাব ও ডায়াবেটিকস সমিতি ইতোমধ্যে আমাদের ডাকে সাড়া দিয়েছে এবং আরো অনেকেই অনুদান দিতে চেয়েছেন।
ডিসি আরো বলেন, খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি জনসাধারণকে সামাজিক দূরত্ব মেনে ঘরে থাকার জন্যে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা মাঠে কাজ করছেন। জেলার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোষ্ট বসিয়ে শহরে আসার কারণ জানতে চাওয়া হচ্ছে। পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বিষয়গুলো সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন। অপ্রয়োজনে ঘোরাফেরা করা ব্যক্তিদের সতর্ক করতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অল্প পরিমানে জরিমানা করা হচ্ছে। সেইসাথে সর্ব সাধারণকে সচেতন করতে মাইকিং, লিফলেট বিতরণ ও গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কার্যক্রম চালাচ্ছি। নির্দেশ অমান্য করে হাট বাজার বসানো ইজারাদারদের জরিমানা এবং প্রবাসীদের বাড়ি বাড়ি লাল নিশান টানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে গত ২১ মার্চ এক গণবিজ্ঞতি প্রকাশ করে নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে। টাঙ্গাইলের সাংবাদিকরা ঝুঁকি নিয়েও আমাদের ব্যাপকভাবে সহযোগিতা করছেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, টাঙ্গাইলে ১২টি আইসোলেশন সেন্টারে ১৩৮টি সিট তৈরি করা হয়েছে। ৫ জন ভর্তি হলেও তারা চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। জ্বর, ঠান্ডা ও হাচি কাশিতে আক্রান্তদের মসজিদ-মন্দিরে না গিয়ে বাড়িতে ধর্মপালন করতে বলা হয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪১ জন। চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিতদের পিপিইসহ যাবতীয় সরঞ্জাম সরবারহ কার হয়েছে।
জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘করোনা যুদ্ধে জয়ী হতে হলে জনগণকে অবশ্যই সর্তক ও সচেতন হতে হবে। শুধু পুলিশ প্রশাসনের উপর নির্ভর করলে চলবে না।
-এসবি/সানি