30.3 C
Dhaka
Thursday, July 17, 2025

সখীপুরে উপজেলা প্রশাসনের জুলাই শহীদ দিবস পালন

নিজস্ব প্রতিবেদক: বুধবার সকালে শহীদ জুলাই দিবস...

সখীপুরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বিভিন্ন প্রকল্পের উপকরণ বিতরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক: সখীপুরে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের বার্ষিক...

বিএনপি ছাড়া বাংলাদেশ কারও হাতে নিরাপদ নয়: মির্জা আব্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক: জামায়াতকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির স্থায়ী...

টাঙ্গাইলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

জাতীয়টাঙ্গাইলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ জামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

মোঃ জামাল উদ্দিন তার নিজ এলাকায় এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। টাঙ্গাইলের পূর্ব ভূঞাপুরের রফিক , কালিহাতী উপজেলার আদাবাড়ি গ্রামের দেওয়ান বাড়ির মোঃ মোশারফ দেওয়ানের ছেলে মেহেদী হাসান উজ্জ্বল, স্থানীয় এক অধ্যক্ষ সহ অনেক সাধারণ মানুষকে ডিসি অফিসের ক্ষমতার অপব্যবহার করে মিথ্যা মামলা দিয়ে তিনি জেল খাটিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

মোঃ জামাল উদ্দিনের ভয়ে কেউ এলাকায় মুখ খুলতে সাহস পায়না। মামলা-মোকদ্দমা ,ডিসি অফিস ও মোবাইল কোর্টের ভয় দেখিয়ে তিনি এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন।

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার মোজাম্মেল হোসেন অনিক নামের জনৈক ব্যক্তি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও দূর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর পৃথক পৃথক লিখিত লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে।

ওই অভিযোগে জেলা প্রশাসকের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন জায়গা থেকে অনৈতিকভাবে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ, জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ক্ষমতা ব্যবহার করে জনসাধারণকে ভয়ভীতি প্রদর্শন,অন্যায়ভাবে হয়রানি, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি সহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগকারী উক্ত জামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবী জানিয়েছেন।

তার লিখিত অভিযোগ ও এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মচারী মোঃ জামাল উদ্দিন পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নিজেকে আওয়ামী লীগ পরিচয় দিয়ে অভিযোগকারী ও তার পরিবারকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করেছেন এবং ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন। তার ভয়ে এলাকায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় নাই।

অভিযোগে আরো বলা হয়, তার তিন ভাই আদম ব্যবসার সাথে যুক্ত আছেন। বিভিন্ন এলাকার মানুষের নিকট থেকে বিদেশ পাঠানোর কথা বলে টাকা নিয়ে আত্মসাত করেছেন। ভুক্তভোগী টাকা চাইতে গেলে উক্ত জামাল উদ্দিন তাদেরকে তার কার্যালয়ের ভয় দেখিয়ে উল্টা তাদেরকে হয়রানি করেন। তিনি এলাকার অনেককে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটিয়েছেন। তিনি তাঁর নিজ এলাকায় একজন মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। তিনি অনিয়ম দুর্নীতি করে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন বলেও জনশ্রুতি আছে।

অভিযোগপত্র ও তথ্যানুসন্ধানে আরো জানা গেছে, টাঙ্গাইল জেলা শহরের সকল ভবন অনুমোদনের জন্য গঠিত বিসি কমিটির সভাপতি ডিসি মহোদয়। মোঃ জামাল উদ্দিন ভবন অনুমোদনের সময় ভবন মালিকদের নিকট থেকে ডিসির নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন সময় মোটা অংকের আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন ।

বিভিন্ন সময় মুক্তিযোদ্ধা, অস্ত্র জমা দানকারী “সর্বহারা “ব্যক্তিদের নিকট থেকেও তিনি অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন।

টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন উপজেলার বালু মহাল থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নাম ভাঙ্গিয়ে তিনি ঘাট মালিকদের নিকট থেকে মাসিক ভিত্তিতে মোটা অংকের টাকা গ্রহণ করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে ।

এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটগন বিভিন্ন সময় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে থাকেন । উক্ত মোঃ জামাল উদ্দিন কালো বাজারী , অবৈধ ব্যবসায়ী সহ যেসব স্থানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে সেসব জায়গায় পূর্বেই খবর দিয়ে অবৈধ আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন।

ডিসি অফিসের পাওয়ার অপব্যবহার করে তিনি জেলার বিভিন্ন তহশিল অফিস থেকে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করেন। এসি ল্যান্ড অফিসের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে তিনি কন্ট্রাকে জনসাধারণকে খারিজ (নামজারি) করে দিয়ে আর্থিক সুবিধা নেন।

নিম্ন আদালতে জামিনের কথা বলে আসামীর নিকট থেকে মৌখিক চুক্তিতে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেন।

অভিযোগে বলা হয় ,পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নিম্ন-আদালতে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের জামিন নামঞ্জুরে জন্য আসামী চিহ্নিত করণের দায়িত্বে ছিলেন ওই মোঃ জামাল উদ্দিন। তিনি আওয়ামী লীগের নেতাদের নির্দেশনা মোতাবেক বিএনপি-জামাতের নেতাকর্মীদের জামিন বাতিলের জন্য ফ্যাসিস্ট আওয়ামী ডিসিদের প্রতিনিধি হয়ে কাজ করেছেন।

অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান মোঃ জামাল উদ্দিনরা ৭ ভাই, দুই বোন। বাবার সম্পত্তি ছিলো সামান্য। ৯ ভাই বোন মিলে কৃষি জমি ছিলো সর্বসাকুল্যে ১০০ শতাংশ।বর্তমানে তার পরিবারের কৃষি জমির পরিমাণ ৫০০ শতাংশের বেশী। বর্তমানে মোঃ জামাল উদ্দিন অঢেল সম্পদের মালিক। সামান্য বেতনে চাকরি করে ভূঞাপুর উপজেলা শহরে দুই ভাইকে দুইটি বাড়ি করে দিয়েছেন। টাঙ্গাইল শহরে ফ্ল্যাট, বিপুল অংকের ব্যাংক ব্যালেন্সসহ অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছেন তিনি।

বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলের ডিসিদের কাছাকাছি থেকে অবৈধভাবে তিনি বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। সাবেক কৃষি মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক ভোলার মামা কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ মোজহারুল ইসলাম তালুকদারের সুপারিশে তার পদোন্নতি ও ডিসি অফিসে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করেন।

অভিযোগকারী অভিযোগে বলেন,” আমরা যখন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে জীবন বাজি রেখে কালিহাতীতে ও টাঙ্গাইলে মিছিল-সমাবেশ করি তখন তৎকালীন ডিসির দালাল এই জামাল উদ্দিন আমাদেরকে নানাভাবে ভয় দেখিয়েছেন এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতাকে আক্রমণ করার জন্য পরিকল্পনা করেছেন।”

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মোঃ জামাল উদ্দিন মুঠোফোনে সাংবাদিকদের জানান, ” আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়।”

অভিযোগকারী মোজাম্মেল হোসেন অনিক সাংবাদিকদের বলেন, ” দূর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি চাই ।”

Check out our other content

Check out other tags:

Most Popular Articles