সাইফুল ইসলাম সানি : আগামী নভেম্বরে দাড়িয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দাড়িয়াপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের পাঁচজন, বিএনপির একজন এবং কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের একজনসহ সাতজন প্রার্থী প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত রয়েছেন। এর আগে প্রচারণায় ধীরগতি লক্ষ্য করা গেলেও গত ঈদ-উল আযহা’র পর থেকে পুরোদমে প্রচার-প্রচারণায় ফিরেছেন প্রার্থীরা। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের পাশাপাশি সংরক্ষিত মহিলা আসনের প্রার্থী ও সাধারণ সদস্য প্রার্থীরাও ইউনিয়নের অলি-গলিতে ব্যানার ও পোস্টার সাটিয়ে ভোটারদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ভোটারদের মধ্যেও দেখা গেকেছ দারুণ উৎসাহ উদ্দিপনা। নির্বাচনী কথাবার্তায় চায়ের কাপে ঝড় বইছে প্রতিনিয়ত। প্রার্থীরা একদিকে ভোটারদের মন জয় এবং অন্যেিদক মনোনয়ন বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা উপজেলার শীর্ষ নেতাদের মন জয় করতেও ব্যস্ত সময় পার করছেন। যেকোন মূল্যে যেনো দলীয় মনোনয়ন পেতেই হবে। দুই কোল রক্ষায় অনেকটা হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রার্থীদের।
সখীপুর বার্তা’র অনুসন্ধানে জানা যায়, দাড়িয়াপুর ইউনিয়নে বৃহৎ তিনটি রাজনৈতিক দলের সাতজন চেয়ারম্যান প্রার্থী নিজ নিজ দলের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের পাঁচজন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের একজন এবং বিএনপির একজন। এ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন- বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম শাইফুল ইসলাম শামীম, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সদস্য অধ্যাপক মো. রহিজ উদ্দিন, দাড়িয়াপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনছার আলী আসিফ, জেলা বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পরিষদের সহ-সভাপতি মো. আউরিয়া হোসেন ও উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি এমএ ছবুর। দাড়িয়াপুর ইউনিয়নের প্রথম নির্বাচনে দাড়িয়াপুরের বাসিন্দা এসএম শাইফুল ইসলাম শামীম ইউনিয়নটির প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে ব্যাপকভাবে জমে উঠেছিল এলাকা ভিত্তিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা। ছোট মৌশা গ্রামের বাসিন্দা আনছার আলী আসিফ অল্প ভোটের ব্যবধানে হেরে যান। ইউনিয়নের বৃহত্তম প্রতিমা বংকী গ্রামের বাসিন্দা ও সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজের অধ্যাপক রহিজ উদ্দিনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তবে ইউনিয়নের পূর্বাঞ্চলে আনছার আলী আসিফ ও অধ্যাপক রহিজ উদ্দিনের মধ্যে ভোট ভাগ হয়ে যাওয়ায় দু’জনকেই পরাজয়ের মাশুল গুনতে হয়েছে। এবার পাল্টে গেছে নির্বাচনের ধরণ। দলীয় প্রতীকে হচ্ছে স্থানীয় নির্বাচন। বলাবহুল্য এবার হেভিয়েট এই তিন প্রার্থীই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। অন্যদিকে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের উপজেলা কমিটির সহ-সভাপতি ও দাড়িয়াপুর এসএ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. সানোয়ার হোসেন জোরালোভাবে নির্বাচনী প্রচারণায় সময় পার করছেন। বিএনপি থেকে দলটির ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি কবির হাসান এ ইউনিয়নে নির্বাচনে লড়বেন বলে পোস্টার বার্তায় জানিয়েছেন। তবে এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন ভোটের হিসেবে দলীয় ঐক্যই বেশি প্রাধান্য পাবে বলে ধারণা করছেন সাধারণ ভোটাররা। তাই ভোট যুদ্ধের আগে মনোনয়নের বিষয়টাও মাথায় রাখতে হচ্ছে প্রার্থীদের। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও বর্তমান চেয়ারম্যান এসএম শাইফুল ইসলাম শামীম বলেন, ‘আমি গত সাড়ে চার বছর ধরে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছি। দীর্ঘ এ সময়টাতে আমি ইউনিয়নবাসীর ব্যাপক ভালবাসা পেয়েছি। আগামি দিনগুলোতে আমি ইউনিয়নবাসিকে পাশে চাই এবং সুখে দুঃখে তাদের পাশে থাকতে চাই।’ দাড়িয়াপুর এস উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি ইতোমধ্যেই ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় সভা-সমাবেশ করেছি। এসব সভা-সমাবেশে মানুষ স্বতস্ফুর্তভাবে অংশ গ্রহণ করে নির্বাচনে আমার পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।’ ইউনিয়নের প্রতিমা বংকী গ্রামের বাসিন্দা প্রবীণ ব্যক্তি নয়ন উদ্দিন বলেন, ‘শেষ বয়সে দায়িত্বশীল একজন মানুষকে চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চাই। যে ইউনিয়নের উন্নয়নের কথা চিন্তা করবে আমরা তাকেই ভোট দেব।’ একই গ্রামের মহিলা ভোটার মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস পেলে আমরা ভোট দিতে যাব এবং গরীব, দুঃখী মানুষের খোঁজ খবর রাখে এমন লোককেই ভোট দেব।’ ওই দুই ভোটারের মত সাধারণ ভোটারদেরও একই অভিমত সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস পেলে স্বতস্ফুর্তভাবে ভোট দিতে যাবেন তারা। গত পাঁচ বছরে সুখে-দুঃখে যাকে পাশে পেয়েছেন তাকেই তাঁরা চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চান।