34.5 C
Dhaka
Sunday, April 20, 2025

সখীপুরে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ৫লাখ টাকা অর্থ সহায়ত

নিজস্ব প্রতিবেদক: সখীপুরে অগ্নি দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের...

সখীপুরে ধানক্ষেত থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার

জাহিদ হাসান: টাঙ্গাইলের সখীপুরে বাড়ির পাশের ধান...

দিনে চাকরি রাতে ভ্যানচালক

সখীপুরদিনে চাকরি রাতে ভ্যানচালক

Sakhipur_Tang_Pic (12.3.17) VanRashid

  • মামুন হায়দার: আবদুর রশীদ একজন চাকরিজীবী। একটি মাধ্যমিক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। দিনে কর্ম ব্যস্ততা শেষে মানুষ যখন রাতে ক্লান্ত দেহে প্রশান্তির ঘুমে যান ঠিক তখনই দ্বিতীয় বারের মতো কর্ম ব্যস্ততা শুরু করেন কচুয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী (পিয়ন) আবদুর রশীদ। পরিবারের সাত সদস্যের উপার্জনক্ষম একমাত্র ব্যক্তি আবদুর রশীদ সন্ধ্যার পর একটি অটোভ্যান নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে এটিই তার প্রাণপণ চেষ্টা। না হলে যে পরিবারের লোকজনকে না খেয়ে থাকতে হবে। এভাবেই চলছে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কচুয়া গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে আবদুর রশীদের জীবন।  আবদুর রশীদ একই গ্রামের কচুয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী (পিয়ন)। সম্প্রতি তার সঙ্গে কথা হয় এই সখীপুর বার্তার এ প্রতিবেদকের সঙ্গে। জানালেন জীবনের অব্যক্ত কথা। প্রায় তিন দশক তার এই চাকরি জীবন। সে জানায়, স্বল্প বেতনে পরিবারের সাত সদস্যের চাহিদা মেটানো অসম্ভব হয়ে পড়ায় বাধ্য হয়েই ভ্যানগাড়ীর হাতল ধরা। দিনেতো স্কুলেই চাকরির কাজ। কৃষি কাজে রাতে কেউ শ্রম কিনবে না। তাই রাতে ভ্যান চালাই। ভ্যানটিও আবার ঋণ করে কেনা। আগে ভাড়ায় ভ্যান চালাতাম। ভ্যান চালাচ্ছি ১৫/১৬ বছর ধরে। নিজের জমি জমা বলতে বাড়ি ভিটে ছাড়া কিছুই নেই। স্ত্রী ও পাঁচ কন্যা সন্তান নিয়ে সাত সদস্যের পরিবার। অর্থের অভাবে মেয়েদের পড়ালেখা করাতে না পেরে কনিষ্ঠ সন্তান আমিনা (৩) কে দত্তক দিয়েছেন। চতুর্থ মেয়ে মিম (৭) স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। দ্বিতীয় মেয়ে হেনা (১২) ও তৃতীয় মেয়ে সাথী (১০) অর্থের অভাবে পড়ালেখা করাতে না পারায় স্কুলে না গিয়ে বাড়িতেই আছে। বড় মেয়ে শিখা (১৫) এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। ভ্যান চালক আবদুর রশীদের মানবেতর জীবনযাপন। কোনো স্বচ্ছ পারিবারিক জীবন তার নেই। স্বপ্নহীন এই মানুষের কাছে তাই কোনো উন্নত জীবনের ভাবনা ধরা দেয় না। নিত্য নিষ্ঠুরতার মাঝেই তার বসবাস। রাত বাড়ার সাথে সাথে শহর গ্রাম নিস্তব্ধ হতে থাকে। চলতি মানুষের সংখ্যা কমতে থাকে। কেউ বা দিনভর কাজ করে শ্রান্ত দেহে ঘুমিয়ে পড়েছেন। কিন্তু আবদুর রশীদের দিনে পিয়নের চাকরি শেষে পরিবারে ভরণপোষণ ও স্বচ্ছলতা আনতে প্রতিরাতেই যে প্রিয় ভ্যান গাড়ী নিয়ে বের হতে হয়।
    রাতের আলো অন্ধকারে ঘামে ভেজা পিঠ। সস্তা শার্টে ঘামে লেপ্টে থাকা ঘুমহীন দেহ আর কিছু উপার্জন নিয়ে ভোরে বাড়ি ফেরতে হয় রশীদের। সকালে আবার স্কুলের কাজের জন্য দৌঁড়ানো। এভাবেই চলে পরিবারের চাকা সচল রাখার এক যন্ত্রমানব আবদুর রশীদের জীবন চাকা।

Check out our other content

Check out other tags:

Most Popular Articles