নিজস্ব প্রতিবেদক: সখীপুরে দুই কলেজছাত্রীকে রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে বখাটেরা। গত ২০ ডিসেম্বর বুধবার বিকেলে মহিলা কলেজ সড়কের রফিকরাজু ক্যাডেট স্কুলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। কলেজের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা ছাত্রী নিবাস থেকে অটোভ্যান যোগে সখীপুর বাজারে আসার পথে ওই দুই ছাত্রী হামলার শিকার হন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বখাটেরা দুই ছাত্রীকে জোরপূর্বক নামিয়ে রড দিয়ে পেটাতে থাকে। একপর্যায়ে ওই দুই ছাত্রী মাটিতে লুটিয়ে পড়লেও তাদের লাথি মারতে থাকে।
সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজের দুই ছাত্রীর ওপর হামলার প্রতিবাদে ওই কলেজের শিক্ষার্থীরা লাঠি হাতে মিছিল সমাবেশ করেছে। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় ওই দুই ছাত্রীর সহপাঠী ও বান্ধবীরা জানান, মেয়েদের ওপর নির্মম বর্বরোচিত হামলা মেনে নেয়া যায়না। হামলাকারীদের বিষ দাঁত ভেঙে দিতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে কোনো নারীর ওপর এমন হামলা কেউ করতে না পারে। ওই কলেজের শিক্ষার্থী তাহমীনা আক্তার হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক দাবি করে বলেন, যাদের ওপর হামলা করা হয়েছে তারা খুবই শান্ত ও ভাল মেয়ে। সন্ত্রাসীদের শাস্তির দাবিতে আজ লাঠি হাতে রাজপথে নেমেছি।
গত ২১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিাবার সকাল সাড়ে ১১টায় মিছিলটি সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজ থেকে বের হয়ে পৌর শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। একপর্যায়ে মিছিলটি সখীপুর থানার সামনে অবস্থান নেয়। পরে ওসি মাকছুদুল আলম গ্রেপ্তারকৃতদের শাস্তি নিশ্চিত করার আশ্বাস দিলে তারা মোখতার ফোয়ারা চত্বরে সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ করে। ঘটনার প্রতিবাদে মোখতার ফোয়ারা চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে কলেজের অধ্যক্ষ রেনুবর রহমান, বাংলা বিভাগের শিক্ষক মুহাম্মদ আবদুল আলীম প্রমুখ বক্তব্য দেন। এ সময় তারা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ চলায় ঢাকা-সখীপুর সড়কের দুইপাশে শতশত যানবাহন আটকা পড়ে তীব্র যানযটের সৃস্টি হয়।
হামলার ঘটনার পর কলেজের অধ্যক্ষ রেনুবর রহমান পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করলে সখীপুর থানা পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ রাতেই মামলার আসামি লোকাল বয়েজ ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মনোয়ার হোসেন অন্তর (২৫), উপজেলার আড়াইপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে জাহিদ হাসান (১৯), পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ডের কাহারতা গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে সাকিব আল হাসান (১৮), একই এলাকার সোহেল রানার ছেলে কাব্য (১৮) এবং ৪ নম্বর ওয়ার্ডের রফিকুল ইসলামের ছেলে সিয়াম হাসানকে (২০) গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আহত ছাত্রীর বাবা মুঠোফোনে সখীপুর বার্তাকে বলেন, আমার মেয়েকে চিকিৎসার জন্যে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তিনি মেয়ের ওপর হামলাকারীদের শাস্তি দাবি করেন।
ওই কলেজের অধ্যক্ষ রেনুবর রহমান বলেন, ছাত্রীদের হামলা মেনে নেওয়া যায়না। এর কঠোর বিচার হওয়া উচিত। ছাত্রীদের ওপর হামলার বিচার দাবি করেন তিনি।
সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাকছুদুল আলম বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার নেপথ্যে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
আদালত পুলিশের পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, আগামি ২৬ ডিসেম্বর রিমান্ড শুনানি হবে।