23 C
Dhaka
Tuesday, March 25, 2025

সখীপুরে ১৬ হাজার উপকারভোগী পেলেন ভিজিএফের চাল

নিজস্ব প্রতিবেদক: আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে...

আমরা দেশপ্রেমিক অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পেয়েছি: আযম খান

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস...

সংস্কার বাস্তবায়ন করতে নির্বাচন অত্যাবশ্যকীয়: আযম খান

সাইফুল ইসলাম সানি: বিএনপির (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল)...

ধর্মীয় শিক্ষার অনন্য প্রতিষ্ঠান কামালিয়াচালা আলিম মাদ্রাসা

বাংলাদেশশিক্ষাধর্মীয় শিক্ষার অনন্য প্রতিষ্ঠান কামালিয়াচালা আলিম মাদ্রাসা

Kamaliachala Alim Madrasha Pic

  • এম সাইফুল ইসলাম শাফলু: ষাটের দশকে মনিরুল উলুম ফোরকানিয়া মাদ্রাসা নামে শুরু হলেও ১৯৮৪ সালে কামালিয়াচালা আলিম মাদরাসা নামে নামকরণ করা হয়। সখীপুর থেকে ১৮ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে মির্জাপুর উপজেলার সীমানা ঘেঁেষ প্রাকৃতিক এক অপরুপ সৌন্দর্য মন্ডিত ৫ নম্বর হাতীবান্ধা ইউনিয়নের হাতীবান্ধা গ্রামে ২ একর ২৬ শতাংশ জমির ওপর উপজেলার অন্যতম ধর্মীয় এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি গড়ে ওঠে। জীবনে যে সময়টা হেসে খেলে বেড়ানোর কথা কিংবা বাবার আয়ে জীবন যাপন করার কথা ঠিক সময়, সেই বয়সে হাতীবান্ধা  গ্রামের সভ্রান্ত মুসলিম ও ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান সরবেশ আলী গ্রাম ও ইউনিয়নের ধর্মীয় শিক্ষাকে প্রসার করতেই এ প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেন। প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে যাদের ভূমিকা অপরিসীম তাদের মধ্যে মাওলানা রমজান আলী, আকবর আলী মেম্বার, আব্দুর রাজ্জাক মুন্সী, আবদুর রউফ মুন্সী, রমিজ উদ্দিন মুন্সী, হাজী মফিজুল হক, মনিরুল ইসলাম, শুকুরজান, মাওলানা আবদুল হাই সালাফী, খালেকুজ্জামান, হাজী ফয়েজ উদ্দিন মেম্বার, এবাদুল্লাহ সিকদার, আবদুল ওয়াহাব, আবুল হোসেন, সরবেশ আলী প্রমুখ দানবীর ব্যক্তিত্ব। প্রতিষ্ঠানে অর্থ  দিয়ে বিভিন্ন সময় যারা সহযোগিতা করেছেন, তাদের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক জিএম বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক মিঞা, হাতীবান্ধা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নবীন হোসেন, বর্তমান চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন এবং মতিয়ার রহমান সরকার ওরফে সাঈদ সরকারের নাম বিশেষভাবে স্মরণীয়।  মাদ্রাসার পাশেই উপজেলার ঐতিহ্যবাহী গরুর হাঁট কামালিয়াচালা বাজার। যেখানে টাঙ্গাইল জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নৌকা ও ট্রাকযোগে গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়া ক্রয়-বিক্রয় করতে বেপারীরা ভীড় জমান। এ সময় প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে যারা জমি দিয়ে সহযোগিতা করেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন আবদুল হালিম সরকার ৪০ শতাংশ, মো. এবাদুল্লাহ মিয়া ৬৫ শতাংশ, আবদুল ওয়াহাব ৩০ শতাংশ, আবদুল রারেক মিয়া ২১ শতাংশ, ইবাদুল্লা ১৪ শতাংশ, রুপশি বেওয়া ০৭ শতাংশ, আবদুর রাজ্জাক ১৪ শতাংশ, ভানু বিবি ৭ শতাংশ এবং হেলাল উদ্দিন ৭ শতাংশ।  ধূমপান ও রাজনীতি মুক্ত এ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানটি ১৯৮৪ থেকে দাখিল, ১৯৮৬ সালে এমপিওভূক্ত এবং ১৯৯০ সালে আলিম মাদ্রাসা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে ওই মাদ্রাসায় ৪৫৩ জন শিক্ষার্থী এবতেদায়ী থেকে আলিম পর্যন্ত নিয়মিত অধ্যয়ন করছেন। মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে অদ্যবধি সভাপতি হিসেবে আছেন ১ জানুয়ারি ১৯৮৪ সাল থেকে ২০ মে ২০০২ সাল পর্যন্ত মো. আবুল হোসেন, ২৭ অক্টোবর ২০০২ থেকে ১৭ জুলাই ২০১২ পর্যন্ত মো. মতিয়ার রহমান সরকার এবং ১৮ জুলাই ২০১২ থেকে অদ্যবধি সভাপতি হিসেবে হাতীবান্ধা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নবীন হোসেন তাঁর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
    মাদ্রাসার সুপার হিসেবে ছিলেন, ১ জানুয়ারি ১৯৮৪ সাল থেকে ৩১ মে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত মো. আব্দুর রহমান আনছারী, ভারপ্রাপ্ত সুপার হিসেবে ১ জুলাই ১৯৮৭ সাল থেকে ৩১ নভেম্বর ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত মো. নূরুল ইসলাম খান, সুপার হিসেবে ১ ডিসেম্বর ১৯৮৮ থেকে ৩০ জুন ১৯৯২ পর্যন্ত আ ফ ম আবদুল করিম যিনি পরবর্তীতে ১ জুলাই ১৯৯২ সাল থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি ২০০৪ সাল পর্যন্ত অধ্যক্ষ হিসেবে ছিলেন। এরপর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে ১২ ফেব্রুয়ারি ২০০৪ থেকে  ২ জানুয়ারি ২০০৭ সাল পর্যন্ত মো. জাহিদুল ইসলাম এবং সর্বশেষ ৩ জানুয়ারি ২০০৭ সাল থেকে অদ্যবধি অত্যন্ত ন্যায় ও সততার সাথে অধ্যক্ষ হিসেবে মাদ্রাসার সুনাম বয়ে এনেছেন মো. ফজুলল হক ( কামিল হাদিস তফসির, এম এ প্রথম বিভাগ)। ফলাফলে সখীপুরের হাতে ঘোনা কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এটি অন্যতম। ২০১৫ সালে এবতেদায়ী পরীক্ষায় ২৫ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে ২৫ জনই পাশ করে, জেডিসি পরীক্ষায় ৪৪ জন অংশ নিয়ে ৪০ জন পাশ করে পাসের হার ৯১ ভাগ। দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেয় ২০জন পাশ করে ১৮ জন পাসের হার ৯০ ভাগ এবং আলিম পরীক্ষায় ১৩ জন অংশ নিয়ে ১১ জন পাশ করে পাসের হার ৮৪. ৬২ ভাগ। ২০১৬ সালে এবতেদায়ী পরীক্ষায় অংশ নেয় ২৭ জন পাশও করে ২৭ জন, জেডিসিতেও ৪০ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৪০ জনই পাশ করে। দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেয় ২২ জন পাশ করে ২১ জন পাসের হার ৯৫.০৫ ভাগ এবং আলিম পরীক্ষায় ২১ জন অংশ নিয়ে ২০ জন পাশ করে। পাসের হার ৯৫.২৪ভাগ। মাদ্রাসায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীসহ মোট ২৪ জন  শিক্ষক-কর্মচারী এবতেদায়ী থেকে আলিম পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পাঠদানসহ মাদ্রাসার সুনাম বয়ে আনতে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। রয়েছে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কম্পিউটার ও শরীরচর্চা শিক্ষক। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ভাল থাকায় প্রতিদিন কম্পিউটার শিক্ষক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল দেশ গড়ার প্রত্যয়ে হাতে কলমে কম্পিউটার চালনার বিভিন্ন দিক শিক্ষা দিয়ে থাকেন। এছাড়াও শরীরচর্চা শিক্ষক প্রতিদিন শ্রেণি কক্ষের পাঠদান শুরুর আগে শিক্ষার্থীদের এসেম্বলী ক্লাশ নিয়ে থাকেন। আলিম পরীক্ষার্থীদের ভাল ফলাফলে শ্রেণিকক্ষের পাঠদানের বাইরেও রয়েছে অতিরিক্ত ক্লাশের ব্যবস্থা। লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলায়ও বেশ এগিয়ে।  প্রতিষ্ঠানটি বেশ কয়েকবার হয়েছে পুরস্কৃত।
    প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মো. ফজলুল হক মাদরাসার বেশ কিছু সমস্যা তুলে ধরে বলেন,  ১৯৯৭ সালে ফেসালিটিজ বিভাগের নির্মিত একমাত্র পাকা ভবনটি প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায়। অচিরেই ভবনটির সংস্কার প্রয়োজন। এছাড়াও কাচা ভবনগুলোর মেঝে পাকাকরণ প্রয়োজন। স্থানীয় এমপি অনুপম শাহজাহান জয় মাদরাসার বার্ষিক সভায় নতুন ভবন এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ শওকত শিকদার মাদ্রাসার উন্নয়নে অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলেও তিনি জানান।

Check out our other content

Check out other tags:

Most Popular Articles