
- ইসমাইল হোসেন: ২০১৩ সালে যত্রতত্র গাড়ি পাকিং ও হাইড্রোলিক হর্ণ বন্ধে নির্দেশনা থাকলেও বড়লোকের বখে যাওয়া সন্তানদের মোটরসাইকেলের নানারকম কসরত ও এ্যাম্বুলেন্সের মত হু হু শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সখীপুর উপজেলার সাধারণ জনগণ। নিজেদের মোটরসাইকেলের ডিজিটাল হর্ণ লাগিয়ে কুরুচিপূর্ণ নানা শব্দও বাজিয়ে চলছে অহরহ। এসব মোটরসাইকেলের চালক সবাই যুবক। এরা সবসময় দলবেঁধে বের হয়। রাস্তায় চলন্ত গাড়ির ঠিক পেছনে পৌঁছেই এসব বিকট শব্দ-ছড়ানো হর্ন বাজিয়ে সামনের গাড়ির চালককে হঠাৎ তটস্থ করে দিচ্ছেন তারা। ওইসব মোটরসাইকেলের ব্রেকের সঙ্গে সংযোজন হয়েছে এ ধরনের সাউন্ডও। আছে সাইড ইন্ডিকেটের সাউন্ড। আবার কিছু কিছু মোটরসাইকেলে আবার সাইরেন যুক্ত করা। বাইক চলার সময় সাইরেনের মতো শব্দ শুনে পুলিশ, এ্যাম্বুলেন্স বা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ভেবে এসব মোটরসাইকেলের জন্য রাস্তা ফাঁকা করে দেন। যে কারোর আশপাশে এসব হর্ণ হঠাৎ বেজে উঠলে মানুষজন, অন্য গাড়ির চালকরাও হকচকিয়ে হয়ে উঠেন মুহূর্তেই। এমন দৃশ্য প্রতিদিনই দেখা যায় উপজেলাতে। ওইসব চালকেরা বিকাল গড়াতেই উপজেলার বিভিন্ন ব্যস্ততম রাস্তা, অলি-গলিতে কার রেসিংয়ে মত্ত থাকছে এতে প্রায়ই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। ওইসব মোটরসাইকেল চালকেরা অযথা হর্ণ বাজিয়ে চলছে। বিনাকারণে এক্সেলেটর বাড়িয়ে বিরক্ত করছে সাধারণ পথচারিদের। মেয়েদের দেখলেই হর্ণ বাজানোর প্রবণতা আরও বেড়ে যায়। এই মোটরবাইক ত্রাসের কারণে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়তে হয় নারী ও শিশুদের। মোটরসাইকেলে সংযোজিত নানা কুরুচিপূর্ণ হর্ণের মাধ্যমে স্কুল-কলেজের ছাত্রীদের বিরক্ত করার অভিযোগও পাওয়া গেছে। নব্য রোমিওরা ইভটিজিং সংক্রান্ত কঠোর আইন থেকে রক্ষা পাওয়ার পাশাপাশি তরুণীদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এই বিকল্প হর্ণ ব্যবস্থা চালু করেছে বলে মনে করেছেন ভুক্তভোগীরা। প্রত্যক্ষদর্শী ও উত্ত্যক্ততার শিকার স্কুল-কলেজ পড়–য়া একাধিক ছাত্রী জানান, স্কুলে প্রবেশ ও ছুটির সময়ই বখাটে শ্রেণির একদল যুবক তাদের মোটরসাইকেল নিয়ে স্কুল-কলেজের গেটের আশপাশে জড়ো হয়। তারা বিশ্রী অঙ্গভঙ্গিসহ নিজেদের মুখে বাজে কোন সাউন্ড না করলেও তাদের ব্যবহৃত গাড়িতে ইভ টিজিং উপকরণ সংযুক্ত করা আছে। মোটরবাইক মেকানিক মিঠু মিয়া বলেন, বাইকের সাইলেন্সারের পেছনের অংশ খুলে ফেলে অনেক। এছাড়া অনেক সাইলেন্সার থেকে একটি পার্টস খুলে ফেলে।
এ বিষয়ে সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাকছুদুল আলম বলেন, মোটরসাইকেলে ওইসব হর্ণ বাজানো নিষিদ্ধ। খুব দ্রুত নিষিদ্ধ হর্ণ ব্যবহারকৃত মোটরসাইকেল চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমি সরকার রাখী বলেন, ওইসব মোটরসাইকেল চালকের বিরুদ্ধে খুবদ্রুত ভ্রামম্যাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।