সাইফুল ইসলাম সানি: একসময় ঘোড়ার গাড়ি টমটম ছিল রাজা-জমিদার ও বিশেষত ধনাঢ্য পরিবারের অন্যতম বাহন। যান্ত্রিকতার এই যুগে এসে সেই পুরনো ঐতিহ্য টমটম হারিয়ে গেছে। কিন্তু সখীপুরে ঘোড়াগুলো দিয়ে নিয়মিত অতিরিক্ত বোঝা বহন করা হচ্ছে। বিশেষভাবে তৈরি ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে ভারি ভারি গাছ বহন করা হচ্ছে। প্রায় এক থেকে দুই টন ওজন নিয়ে প্রতিদিন মেঠো চড়াই পথ বেয়ে চলেছে একসময়ের রাজকীয় ঘোড়া। যান্ত্রিক বাহন না হলেও একটি ঘোড়ার গাড়ি রাস্তায় নামাতে গেলে খরচ নেহাত কম পড়ে না। গাড়িটি তৈরি করতে ব্যয় হয় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। এ ছাড়া একটি ভালো জাতের ঘোড়া কিনতেও লাখ টাকা ছাড়িয়ে যায়। সব মিলিয়ে একটি ঘোড়ার গাড়ি তৈরিতে এক থেকে দেড় লাখ টাকা খরচ হয়। স্থানীয়ভাবেই কোনো প্রকার কারুকাজ ছাড়া শুধু লোহা আর কাঠ দিয়ে দুই চাকার মালবাহী গাড়ির বডি তৈরি হয়। কাঠ পরিবহন ছাড়াও ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহূত হয় বাসাবাড়ির জিনিসপত্র সরানো এবং ধান, পাট, সবজিসহ নানা প্রকার কৃষিপণ্য বহনে। তবে এ অঞ্চলের কাঁচা সড়কে কাঠ পরিবহনের জন্যই গাড়িগুলো বিশেষভাবে তৈরি করা হয়। এ জন্য গাড়িগুলোতে মানুষ পরিবহনের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি।

বোয়ালী এলাকার ঘোড়ার গাড়িচালক সলিম উদ্দিন বলেন, আমরা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কাঠ বহন করে পৌরসভায় অবস্থিত স’ মিলগুলোতে কাঠের ট্রিপ দিয়ে থাকি। এ অঞ্চলের যেসব কর্দমাক্ত ও কাঁচা সড়কে ট্রাক চলাচল করতে পারে না, সে সময় আমরা ঘোড়ার গাড়ি দিয়েই ভারি গাছ পাকা সড়কে পৌঁছে দেই।’
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবদুল জলিল বলেন, ‘ঘোড়া সাধারণত ওজন বইবে এটা স্বাভাবিক। তবে সবকিছুরই একটি সীমা রয়েছে। এ অঞ্চলের ঘোড়াগুলোকে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি ওজন দেওয়া হয়। যা অমানবিক পর্যায়ে চলে যায়। এ ছাড়া একটি ঘোড়াকে প্রতিদিন তার ওজনের ৬ থেকে ৮ শতাংশ প্রোটিন খাওয়ানো উচিত। এছাড়া দিনভর পরিশ্রম করা ঘোড়াগুলোর ১৫ দিন অন্তর চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দেন ওই কর্মকর্তা।
-লেখক: সংবাদকর্মী