ইসমাইল হোসেনঃ অপরাধীকে ধরতে রীতিমতো নানান কৌশল অবলম্বন করতে শোনা যায় পুলিশ সদস্যদের।
এবার রিকসা চালক সেজে অল্প সময়ের মধ্যে এক হত্যা মামলার আসামিকে ধরে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন টাঙ্গাইলের সখীপুর থানার এক উপ-পরিদর্শক (এসআই)।
পরনে লুঙ্গি-শার্ট, পায়ে ছেঁড়া স্যান্ডেল। কাঁধে গামছা। দেখে আপাদমস্তক রিকসা চালক মনে হলেও আদতে এটা এসআই ফয়সাল আহম্মেদের আসামি ধরার গল্প।
সখীপুর থানা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ঘাটেশ্বরী গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী আবদুর রহিমের স্ত্রী আফরোজা আক্তার (৩০) বিদ্যুৎস্পৃষ্ট মারা যান। আফরোজার দেবর আবদুর রশিদের বিদ্যুৎ লাইন থেকে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে দাবি করেন নিহত আফরোজার চাচাতো দেবর জাবেদ আলী। লাশ সামনে রেখেই দুই চাচাতো ভাই আবদুর রশিদ ও জাবেদ আলী তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় তাদের ঝগড়া মেটাতে জাবেদ আলীর বাবা জয়নাল আবেদীন এগিয়ে আসেন। উত্তেজিত হয়ে একপর্যায়ে আবদুর রশিদ ঘরে গিয়ে ছুরি এনে জাবেদ আলীর পেটে ঢুকিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহত জাবেদ আলীর বাবা জয়নাল আবেদিন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এরপর মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয় সখীপুর থানার এসআই ফয়সাল আহম্মেদকে। তদন্তের শুরুতে এসআই ফয়সাল তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আসামির অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হন।
তদন্তকালে জানা যায়, রশিদ হত্যা পর থেকে সাভারের সি আর পি এলাকায় পজিশনও নিয়েছিলেন। ইতোপূর্বে এসআই ফয়সাল তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় স্থানীয় লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তাদের জানিয়ে পুলিশকে সহায়তা করতে বলেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এসআই ফয়সাল রিকসা চালকের ছদ্মবেশে ওই এলাকায় অবস্থান করেন। একপর্যায়ে এসআই ফয়সাল দেখেন, দূর থেকে একটি লোক একটি দোকানের পাশে অবস্থান নিচ্ছে। এসময় হত্যাকারী রশিদের পাশেই এসআই ফয়সাল ও সঙ্গীয় ফোর্সরা অবস্থান করছিলেন। একপর্যায়ে কোনো কালক্ষেপণ না করে রশিদকে পেছন থেকে জাপটে ধরেন এসআই ফয়সাল। হঠাৎ জনসম্মুখে এমন জাপটে ধরার কারণ উপস্থিত লোকজন জানতে চাইলে নিজের পরিচয় দিয়ে এসআই ফয়সাল বলেন, যাকে ধরা হয়েছে সে হত্যা মামলার আসামি। পুলিশের এমন কাজের জন্য স্থানীয়দের প্রসংশায় প্রশংসিত হন সখীপুর থানা পুলিশের এই চৌকস অফিসার।
এ বিষয়ে সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমীর হোসেন জানান, আসামি রশিদকে গ্রেফতারে এসআই ফয়সালের ভূমিকা প্রশংসনীয়।