সখীপুরের যুবক নিখোঁজের ৫দিন পর গাজীপুর থেকে উদ্ধার, সন্দেহ!

0
13

নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার শওকত (২১) নামের এক যুবককে নিখোঁজের পাঁচদিন পর গাজীপুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে গাজীপুর মেট্রোপলিটনের বাসন থানা এলাকা থেকে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে সখীপুর থানায় নিয়ে আসে। আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত তিনি হাসপাতালে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি উপজেলার শোলাপ্রতিমা গ্রামের রফিক মিয়ার ছেলে।

এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকাল নয়টার পর থেকে শওকত নিখোঁজ হন। নিখোঁজের পর বাড়ির মোবাইল ফোনের ইমোতে দুইলাখ টাকা মুক্তিপণ দাবিতে বেশ কয়েকটি ভয়েস ও খুদে বার্তা পাঠানো হয়। তবে উদ্ধার হওয়া যুবকের অসংলগ্ন আচরণ ও গতিবিধিতে পুলিশ-এলাকাবাসীর মধ্যে অপহরণের ঘটনাটি সাজানো বলে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

শওকতের পরিবার, পুলিশ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২১ বছর বয়সী শওকত তাঁর প্রতিবেশী কয়েকজন ব্যক্তির কাছ থেকে জমিজমা সংক্রান্ত কাগজপত্র ঠিক দেওয়ার কথা বলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বিনিময়ে জমির মালিকদের কিছু ভুয়া কাগজপত্র সরবরাহ করেছেন। এক ব্যক্তির মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট থেকেও হাতিয়ে নিয়েছেন ৪০ হাজার টাকা। শওকতের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগে গত ৭ সেপ্টেম্বর স্থানীয় বোয়ালী বাজারে সালিশি বৈঠক হয়। সালিশে তাঁকে টাকার জন্য চাপ দেওয়া হয়।

এরই মধ্যে গত মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে শওকত নামের ওই যুবক নিখোঁজ হয়ে যান। এ ঘটনায় ওই রাতেই শওকতের বাবা রফিকুল ইসলাম সখীপুর থানায় ছেলে নিখোঁজের বিষয়ে ডায়েরি করেন। এরপর শওকতের মোবাইল নম্বরের ইমো থেকেই দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবিতে ভয়েস ও খুদে বার্তা পাঠানো হয় বাড়ির একটি মোবাইল ফোনে। পরে পুলিশ ও টাঙ্গাইল ডিবি বিষয়টি নিয়ে যৌথভাবে কাজ শুরু করে।

পুলিশ সরেজমিনে তদন্ত করে শওকতের বাবা-মাকে ছেলের নানা অপকর্মের তথ্য জানায়। পরে শনিবার রাতে গাজীপুরের বাসন থানা এলাকায় শওকতকে পাওয়া গেছে বলে সখীপুর থানায় ফোন আসে। রাতেই সখীপুর থানা পুলিশ পরিবারের লোকজন নিয়ে শওকতকে উদ্ধার করে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন।

রোববার বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ইউএসও) রুহুল আমিন মুকুল বলেন, শওকতকে আননোউন পয়জনের রোগী হিসেবে ভর্তি করা হয়েছে। আমরা তাঁকে পর্যবেক্ষণে রেখেছি।

সখীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আজিজুল হক বলেন, ঘটনাটির গুরুত্ব দিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা দ্রুত শওকতের অবস্থান জানার চেষ্টা করেছি। তাঁর গতিবিধিতে বেশ কিছু অসংলগ্নতা লক্ষ্য করা গেছে। এখন যেহেতু সে চিকিৎসাধীন, সুস্থ হওয়ার পর তার মুখ থেকেই প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। বর্তমানে তাকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুরে শওকতের ফুফু লাকী আক্তার জানান, শওকত এখনও চিকিৎসাধীন, পুরোপুরি সুস্থ হলে তার কথা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।