নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি বছরকে বলা হচ্ছে নির্বাচনের বছর। আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তাই নির্বাচনের আগে পবিত্র রজমান শুরু হতে না হতেই সরগরম হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠও। রোজার মাসটিকে উপলক্ষ করে আগে ভাগেই ভোটারদের কাছে যাওয়ার মওকা তৈরি হয়েছে নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের। তাদের আনাগোনায় জমে উঠছে তৃণমূল পর্যায়ের রাজনীতিও। তবে চলতি বছর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে স্বাভাবিকভাবে এবার রাজনৈতিক দলের ইফতার মাহফিল আরও বেশি জমজমাট হয়ে ওঠেছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে চলে জমজমাট রাজনীতিও। এ জন্য শুরু থেকেই বেশ প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো। টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনের রাজনীতিতে ইফতার রাজনীতি-রাজনীতির ইফতার বেশ জমে ওঠেছে। দলীয় উদ্যোগের পাশাপাশি ব্যক্তিগত পর্যায়েও আয়োজন করা হয় ইফতার মাহফিল। দলীয় নেতাকর্মী, পেশাজীবীদের সম্মানসহ বিভিন্ন উছিলায় কর্মসূচির বিস্তৃতি বাড়ানো হয়।
রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকমৃীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ রোজার মাসে ইফতার মাহফিলের পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে তৃনমূল পর্যায়ে মানুষদের কাছে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। উপজেলা, পৌরসভা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে এ ধরনের কর্মসূচি পালন করা হয়। এসব কর্মসূচিতে নিজ নিজ দলের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমের চিত্র তুলে ধরা হয় নিজ দলের পক্ষে। ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা করে জেলা থেকে ইউনিট পর্যায়ে দলের ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরা হয়। বিশেষ করে আ.লীগ সরকারের সাফল্য হিসেবে বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সামনে আনে। অপরদিকে বিএনপি ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের পক্ষে সরকারের বিষোদগারের অন্ত ছিলনা।
নির্বাচনের বছর হওয়ায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের কাছে এবারের রমজান বড় একটি সুযোগ হয়ে উঠেছে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এক দফা গণসংযোগ সেরে নেওয়ার পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আরও যোগাযোগ বাড়াচ্ছেন আওয়ামী লীগ, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। এতে সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ বাড়ছে। বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী ও নেতাকর্মীরা সরকারের মেয়াদকালে পরিচালিত ‘উন্নয়নযজ্ঞ’ মানুষের সামনে টেনে আনছেন। আর বিএনপি বরাবরই খালেদা জিয়াকে ‘মিথ্যা মামলায়’ কারাগারে প্রেরণ, সরকারের বিভিন্ন নীপিড়ন-নির্যাতনের বিষয়টি তুলে ধরছেন। সখীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এবার ৮ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় পৃথক ইফতারের আয়োজন করা হয়। প্রতিটি ইফতার আয়োজনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুতুব উদ্দিন আহমেদকে প্রধান অতিথি হিসেবে রাখা হয়। এসব অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে টাঙ্গাইল-৮ আসনের এমপি ও আগামী জাতীয় সংসদে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী অনুপম শাহজাহান জয়, দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম, জাতীয় শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ শওকত শিকদার, অধ্যক্ষ সাঈদ আজাদ, প্রকৌশলী আতাউল মাহমুদ, সরকার মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান ফারুকসহ স্থানীয় নেতাকমীদের সরব উপস্থিতি দেখা যায়। এছাড়াও পৌরমেয়র আবু হানিফ আজাদসহ দলের জেলা, উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের নেতা-কর্মী সমর্থরা ইফতার অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। গ্রুপিং ভুলে প্রতিটি ইফতার আয়োজনে সকল পর্যায়ের উপস্থিতি দেখা যায়। তাই এবারের রমজান মাস সখীপুর উপজেলা আ.লীগের জন্যে সম্প্রীতির মাস ও আশির্বাদের মাস হিসেবেই দেখছেন স্থানীয় রাজনীতি বিশ্লেষকরা। প্রতিটি ইফতার মাহফিল যেনো এক একটি মিলনমেলা। একইভাবে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের পক্ষ থেকে ইফতারের আয়োজনে দলটির প্রতিষ্ঠাতা প্রধান বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম উপস্থিত ছিলেন। দলকে শক্তিশালী করতে তণমূলের নেতাকর্মীদের আরো সক্রীয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম। উপজেলা বিএনটি দলের পক্ষ থেকে ইফতার আয়োজন করে। ইফতারে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান অংশ নেন। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ইফতারের আয়োজন করছে। ওইসব ইফতার মাহফিলে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নিয়মিত যোগদান করছেন।