ইসমাইল হোসেন :
যত্রতত্র গাড়ি পাকিং ও হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধে নির্দেশনা থাকলেও মোটরসাইকেলের নানারকম কসরতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলা বাসী। নিজেদের গাড়ির সাইলেন্সার পাইপ খুলে রেকে বিকট শব্দ তুলে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা। আবার কেউ কেউ গাড়িতে ডিজিটাল হর্ন লাগিয়ে কুরুচিপূর্ণ নানা শব্দও বাজিয়ে চলছে। মোটরসাইকেলে পটকা ফোটানোর শব্দ এবং এম্বুল্যান্সের শব্দ রেকডিং করে তা অনবরত বাজিয়ে ত্যক্ত-বিরক্ত করে তুলেছে।
জানা যায়, এসব মোটরসাইকেলের চালক সবাই যুবক। এরা সবসময় দলবেঁধে বের হয়। রাস্তায় চলন্ত গাড়ির ঠিক পেছনে পৌঁছেই এসব বিকট শব্দ-ছড়ানো হর্ন বাজিয়ে সামনের গাড়ির চালককে হঠাৎ তটস্থ করে দিচ্ছেন তারা। ওইসব মোটরসাইকেলের ব্রেকের সঙ্গে সংযোজন হয়েছে এ ধরনের সাউন্ডও। আছে সাইড ইন্ডিকেটের সাউন্ড। কিছু কিছু মোটরসাইকেলে আবার সাইরেন যুক্ত করা। বাইক চলার সময় সাইরেনের মতো শব্দ শুনে পুলিশ, এম্বুলেন্স বা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ভেবে এসব মোটরসাইকেলের জন্য রাস্তা ফাঁকা করে দেন অন্য গাড়ির চালকরা। এমন দৃশ্য প্রতিদিনই দেখা যায় উপজেলাতে। ওইসব চালকেরা বিকাল গড়াতেই উপজেলার বিভিন্ন ব্যস্ততম রাস্তা, অলি-গলিতে কার রেসিংয়ে মত্ত থাকছে এতে প্রায়ই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। বিনাকারণে এক্সেলেটর বাড়িয়ে বিরক্ত করছে সাধারণ পথচারিদের। মেয়েদের দেখলেই হর্ন বাজানোর প্রবণতা আরও বেড়ে যায়। এই মোটরবাইক ত্রাসের কারণে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়তে হয় নারীও শিশুদের। মোটরসাইকেলে সংযোজিত নানা কুরুচিপূর্ণ হর্নের মাধ্যমে স্কুল-কলেজের ছাত্রীদের বিরক্ত করার অভিযোগও পাওয়া গেছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও উত্ত্যক্ততার শিকার স্কুল-কলেজ পড়–য়া একাধিক ছাত্রী জানান, স্কুলে প্রবেশ ও ছুটির সময়ই বখাটে শ্রেণির একদল যুবক তাদের মোটরসাইকেল নিয়ে স্কুল-কলেজের গেটের আশপাশে জড়ো হয়। তারা বিশ্রী অঙ্গভঙ্গিসহ নিজেদের মুখে বাজে কোন সাউন্ড না করলেও তাদের ব্যবহৃত গাড়িতে ইভ টিজিং উপকরণ সংযুক্ত করা আছে।
মোটরবাইক মেকানিক মিঠু মিয়া বলেন, বাইকের সাইলেন্সারের পেছনের অংশ খুলে ফেলে অনেক। এতে বাইক চলাচলের সময় বেশি শব্দ হয়। এছাড়া অনেকে সাইলেন্সার থেকে একটি পার্টস খুলে ফেলে। যাকে আমরা বাঁশি বলি।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে ওইসব মোটরসাইকেলের একাধিক চালক বলেন, ভীতি সৃষ্টি করা ও নজর কাড়ার জন্য এ হর্ন ব্যবহার করি।
এ বিষয়ে সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমীর হোসেন বলেন, মোটরসাইকেলে ওইসব হর্ন বাজানো নিষিদ্ধ। ইতিমধ্যে আমরা ৭৫ টি মোটরসাইকেল চালকদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছি। এ অভিযান চলমান থাকবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আমিনুর রহমান বলেন, ওইসব মোটরসাইকেল চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। খুবদ্রুত উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্ব পয়েন্টে গিয়ে আমরা ভ্রামম্যাণ আদালত পরিচালনা করব।