-
মামুন হায়দার: অনেক মুমূষু রোগীর রক্তের জন্য স্বজনরা উদ্বিগ্ন থাকেন। নানা সামাজিক কাজে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো সংগঠনের কর্মীরা প্রতীক্ষাবদ্ধ। কথাগুলো বলছিলেন- টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার ‘আমাদের সখীপুর, আলোকিত সখীপুর’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা। চিকিৎসাবঞ্চিত বিশেষ করে হতদরিদ্র্য চক্ষু রোগীদের জন্য তরুনদের সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে এ ধরণের উদ্যোগ হাতে নেওয়া হয়েছে বলেও জানালেন সংগঠনের সংগঠকেরা সবাই। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৭ মার্চ সখীপুরে জাতীয় শিশুদিবসকে স্বরণীয় করে রাখতে ওই তরুণরা বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে দিনটি পালন করেছে। দিনব্যাপি জাতীয় শিশুদিবসে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরুণরা ‘সখীপুর চক্ষু হাসপাতাল’র চিকিৎসক মো. আনোয়ার হোসেনের সহযোগিতায় বিনামূল্যে চক্ষু ক্যাম্পের আয়োজন করে। উপজেলার ডাকবাংলো চত্বরে তরুণদের আয়োজিত ক্যাম্পে বিশেষজ্ঞ একটি চিকিৎসক দল বিভিন্ন গ্রামের চলৎ শক্তিহীন হতদরিদ্র দুই শতাধিক নারী-পুরুষ চক্ষু রোগীকে চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন। এদের মধ্যে চোখে ছানিপড়া ৫০ জন রোগীকে অপারেশন করা হয়। চিকিৎসার পাশাপাশি বিনামূল্যে ব্লাড গ্রুপ নির্ণয় করা হয়। এর আগে দিবসের সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত শিকদার ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন। এসময় সংগঠনের অন্যতম সংগঠক জাহাঙ্গীর তারেকের সভাপতিত্বে ইউএনও মৌসুমী সরকার রাখী, ওসি মাকছুদুল আলম, শিক্ষক সমিতির সভাপতি শহিদুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান মু. ছবুর রেজা, উপজেলা ইউআরসি আবদুস সোবহান, একাডেমিক সুপারভাইজার মো. আনোয়ার হোসেন, প্রেসক্লাব সভাপতি শাকিল আনোয়ার, সাধারণ সম্পাদক মামুন হায়দার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সংগঠনের কর্মী জাহাঙ্গীর তারেক, তুহিন সিদ্দিকী, এবি সিদ্দিক, নূর আলম, বাবুল সিদ্দিকী, ফজলুল হক শিকদার, মার্শাল মাসুম, মাইনুল ইসলাম মুক্তাসহ সকলেই বলেন, ‘আমাদের সংগঠনটি শুধুমাত্র আর্ত-মানবতার সেবা প্রদানের জন্য গঠন করেছি। বিনামূল্যে চোখের চিকিৎসা, ছানি অপারেশন, ব্লাড গ্রুপ নির্ণয় ছাড়াও পরবর্তীতে একটি ব্লাড ব্যাংক খোলার চিন্তা রয়েছে। ইতোমধ্যে সংগঠনের সদস্যসহ প্রায় ৩০০ তালিকাভুক্ত স্বেচ্ছাসেবী রক্তদাতার গ্রুপ নির্ণয় করে তাদের মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ করা হয়েছে। যে কারও প্রয়োজনে গ্রুপ মিলিয়ে রক্ত দেয়ারও ব্যবস্থা আছে। এভাবে বিনা মূল্যে রক্ত দিয়ে জীবন বাঁচানোর পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতামূলক অনেক কাজ করছেন এই সংগঠনের সদস্যরা। তারা জানান- সংগঠন গঠনের সময় ভাবিনি আমরা এত দূর আসতে পারব। মানুষ আমাদের এত কাছে টেনে নেবে। এখন নিজেদেরই কাছেই অবিশ্বাস্য মনে হয়। কারও রক্তের চাহিদার কথা শুনলে আমরা স্থির থাকতে পারি না। কারণ, মানুষের জীবন বাঁচানোর মধ্যে একটা গভীর আনন্দ আছে। আসলে মানুষের ভালোবাসা পেয়ে সমাজের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা অনেক বেড়ে গেছে।’ কী করে হলো তরুণদের এই মহতী উদ্যোগ? সংগঠনের সদস্যরা জানালেন, সংগঠনের সংগঠকেরা সবাই প্রায় সমবয়সী ও বন্ধু। আড্ডা, অ্যাডভেঞ্চার দুটোই সমান প্রিয় তাঁদের। কেউ স্কুল, কলেজ, বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্র। কেউ ব্যবসায়ী।