17 C
Dhaka
Thursday, January 23, 2025

সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজে ইংরেজি বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

জাহিদ হাসান: টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার একমাত্র নারী...

সখীপুরে ব্যবসায়ীর গলা কাটা লাশ উদ্ধার

জাহিদ হাসান: টাঙ্গাইলের সখীপুরে আব্দুস সালাম (৪৮)...

লাবীব গ্রুপে এসএসসি ও এইচএসসি পাশে নিয়োগ, সখীপুরবাসীর অগ্রাধিকার

নিজস্ব প্রতিবেদক: লাবীব গ্রুপের সিস্টার কনসার্ন Excel...

স্বপ্নভাঙা মন

অন্যান্যসাহিত্যস্বপ্নভাঙা মন

s

সাইফুল ইসলাম সানি

-কি বলে ডাকবো তোমায়?
-লীলাবতী, স্বপ্নকুমারী, সোহানা, রুকসানা, আফসানা নাকি সানজানা?
তুমি আস্তে করে বললে, না, আমার নাম বৃষ্টি।
সেই থেকে আমার প্রিয় একটি নাম বৃষ্টি। বৃষ্টি নামের মেয়েটির বর্ণনা দিতে গিয়ে বলবোনা- সে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী, অপরূপা। শুধু বলবো- বৃষ্টির মায়াবী চোখ, মাঝারী চুল, ছোট মুখ, মুখের ওপর মানানসই একটা নাক। নাকে ছোট্র একটা শ্রীদেবী ফুল পড়ে থাকে বৃষ্টি। ছোট্র কপালটার কোথাও একটি টিপ নেই, গালের কোথাও একটা তিলক নেই। একেবারে সাদাসিধে একটি মেয়ে। ঠিক যেনো আমার মনের গভীরে লুকানো ছবিটা দেখে দেখে বিধাতা তাকে সৃষ্টি করেছেন।
আমার বাড়িতে বৃষ্টি নামের ওই মেয়েটি কোথা থেকে এলো? কেনো এলো? তার সঙ্গে আমার সম্পর্কটাইবা কি? এসব একটা প্রশ্নও আমার মাথায় আসছে না। তবে মেয়েটিকে দেখার পর থেকেই ভাবতে শুরু করলাম- ও যদি আর চলে না যেতো। আমি যখন চাইতাম ঠিক তখনই বিনা মেঘের এই বৃষ্টি আমার তৃষ্ণার্ত মনটাকে ভিজিয়ে শীতল করতো।
এসব আবোল-তাবোল ভাবনা শেষ হতে না হতেই দু’জনে কিছুক্ষণ একই পথে চললাম। হাতে হাত রাখা হলো, দু’জন দু’জনার দিকে কিছুক্ষণ অপলক তাকিয়ে থাকা হলো, কিছু প্রশ্ন, কিছু উত্তর, কিছু না বলা কথাও বলা হলো। এটাই বোধহয় ভালোবাসা, এটাই বোধহয় প্রথম প্রেম।   খোলামেলা চক্চকে একটা কক্ষ। চারপাশে সাদা দেয়াল, দেয়ালের সঙ্গে ঝকঝকে প্রাকৃতিক দৃশ্যের ওয়ালমেট টাঙানো। পাশেই একটি সাদা চাঁদর বিছানো ফিটফাট বিছানা। আমি শুয়ে আছি। দরজা খোলার হালকা শব্দ। লিকলিকে ফর্সা, হলুদ শাড়ী পড়া সেই মেয়েটি কাছে এসে বললো- ‘এই…! তুমি এখনো শুয়ে আছো?’
আমি ঘুমের ভান করে ওপাশ ঘুরে শুয়ে রইলাম। ও আবার কানের কাছে এসে বললো- ‘এই…, উঠোতো, দেখো, কি সুন্দর আজকের সকাল।’
-কতোদিন ভোরের শিশিরে ভেজা সকাল দেখিনা মনে নেই। বৃষ্টি তার শাড়ীর আঁচল চিকন করে মুড়িয়ে আমার কানে শুড়শুড়ি দিয়ে ঘুম ভাঙালো। ভেবেছিলাম ঘুম থেকে উঠে দেখবো- এক কাপ চা হাতে আমার জন্যে সে দাড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু সেসব কিছুই দেখছিনা………।
এপাশ ঘুরতেই ঘুম ভেঙ্গে গেলো আমার। চোখ মেলেই দেখি- চারপাশে ছারপোকাগুলো টিপে টিপে মারার রক্তের দাগ লাগানো দেয়ালের ছোট্র একটা কক্ষ। গাদাগাদি করে চারটি চৌকি বসানো। ধুলোবালিতে নোংরা একটা চাদরের ওপর হতবাগ বসে আছি আমি। বিছানার নিচে বাস করা দু’টো তেলাপোকা মশারীর বন্দিদশা থেকে মুক্তিপেতে দিকবিদিক ছুটাছুটি করছে। কখন যেনো আমার কানের কাছে এসে পড়েছিল। আর আমি ভাবছি……..।
ভাজ করা হাটুর মাঝখানে মাথা রেখে দু-চোখবুজে বসে বসে ভাবছি- বিধাতা এই বাস্তবতার মাঝে কেনো অবাস্তব স্বপ্নগুলো দেখায়? কেনো বৃষ্টিরা ঘুমের মাঝে আমাদের মত হতবাগাদের কাছে ধরা দেয় আবার না বলে যায়?
এখনো প্রতিরাতে স্বপ্ন দেখতে চেষ্টা করি। স্বপ্নে বৃষ্টিকে খুঁজে বেড়াই। মাঝে মাঝে জেগে জেগেই বৃষ্টিকে সঙ্গে নিয়ে স্বপ্ন সাজাতে চাই। কিন্তু তাকে আর খুঁজে পাইনা। হয়তো আর পাবোও না কোনদিন। তবুও বলছি- আজ এই প্রাকৃতিক বৃষ্টিভেজা রাতে স্বপ্নে দেখা বৃষ্টিকে খুব মনে পড়ে।
বৈশাখের ঝড়ো বাতাসে চারিদিকের মরা পাতাগুলো আমার টিনের ঘরের ভাঙ্গা চালায় উড়ে এসে পড়ছে। দু’চোখে আবছা আলো। হঠাৎ দু’এক ফুটা করতে করতে ঝাপটা বৃষ্টি শুরু হলো। মোমের আলোটাও নিভোনিভো করতে করতে নিভে গেলো। আমি একা বসে আছি একেলা। কিন্ত তুমি কই…..?
নাহ, আর স্বপ্ন দেখবো না। কারণ….
আমার স্বপ্নগুলো শুধু স্বপ্নই রয়ে যায়
আশায় আশায় শুধু দিন চলে যায়!
স্মৃতির জানালা দিয়ে আসো বারেবার
ভালোবাসা দিতে নয় শুধুই কাঁদাবার।

Check out our other content

Check out other tags:

Most Popular Articles