বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বের সবচেয়ে তারকাবহুল এবং বিগ ম্যাচ ছিল আজ। জয়ের ধারায় থাকা দুর্দান্ত রংপুর রাইডার্সের মুখোমুখি সাকিব আল হাসানের ঢাকা ডায়নামাইটস।জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ এই হাইভোল্টেজ ম্যাচ দেখতে। ক্রিস গেইল যথারীতি ঘুমিয়ে রইলেন। দুর্ভাগ্যক্রমে আউট হলেন গত ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান রাইলি রুশো।

এরপরেই দলকে জেতানোর দায়িত্ব নিলেন ‘মি. ৩৬০ ডিগ্রি’ খ্যাত এবিডি ভিলিয়ার্স এবং গত ম্যাচের আরেক সেঞ্চুরিয়ান অ্যালেক্স হেলস। দুজনের টর্নেডো ব্যাটিংয়ে ৮ উইকেটে উড়ে গেল ঢাকা ডায়নামাইটস। রংপুর রাইডার্সের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে চলতি টুর্নামেন্টের ৫ম সেঞ্চুরি হাঁকালেন প্রোটিয়া হার্ডহিটার এবিডি ভিলিয়ার্স। টার্গে দুইশর নিচে হওয়ায় সেঞ্চুরির কাছে গিয়েও ৮৫ রানে অপরাজিত থাকতে হয়েছে অ্যালেক্স হেলসকে। এবি অপরাজিত ১০০* রানে। এই জয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠে এল রংপুর রাইডার্স।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ১৮৭ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে বিপদে পড়ে যায় রংপুর রাইডার্স। দলীয় ৫ রানে আবারও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে আন্দ্রে রাসেলের শিকার হন তার স্বদেশী ‘বিগ বস’ ক্রিস গেইল (৬ বলে ১)। পরের বলেই আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান রাইলি রুশোর হ্যান্ডগ্লাভস ছুঁয়ে বল চলে যায় নুরুল হাসানের গ্লাভসে। উইকেটটি পেতে অবশ্য রিভিউ নিতে হয়েছে ঢাকাকে। দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া রংপুর রাইডার্সকে পথ দেখান অ্যালেক্স হেলস এবং এবিডি ভিলিয়ার্স। শুরু করেন ধুন্ধুমার ব্যাটিং। ১৯ বলে অর্ধশত রান ছাড়িয়ে যায় জুটি।
৩২ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন হেলস। তার চেয়েও বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন ‘মি. ৩৬০ ডিগ্রি’ খ্যাত এবিডি ভিলিয়ার্স। ঢাকার রান যেহেতু দুইশর নিচে তাই একজনই তিন অংকে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। এই পরিস্থিতিতে হেলস-ভিলিয়ার্স যেন পাল্লা দিয়ে রান তুলতে থাকেন। রংপুর যতই জয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, হেলসকে ততই ছাড়িয়ে যাচ্ছিলেন ভিলিয়ার্স। শেষ অবধি জয় হয় তারই। ৫০ বলে ৭ চার ৩ ছক্কায় বিপিএলে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন মি. ৩৬০ ডিগ্রি। হেলস অপরাজিত থাকেন ৫৩ বলে ৮ চার ৩ ছক্কায় ৮৫ রানে। এই দুজনের অবিচ্ছিন্ন ১৮৪ রানের জুটিতে ৮ উইকেট এবং ১০ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় রংপুর রাইডার্স।
এর আগে সোমবারের হাইভোল্টেজ ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮৬ রান তোলে ঢাকা ডায়নামাইটস। ৩৫ রানের ওপেনিং জুটিতে শুরুটা খারাপ হয়নি। হজরতুল্লাহ জাজাইকে (১৭) মোহাম্মদ মিথুনের তালুবন্দি করে এই জুটি ভাঙেন ফরহাদ রেজা। দ্বিতীয় আঘাত নাজমুল অপুর। ১৯ বলে ২৭ করা অপর ওপেনার সুনিল নারাইনকে ফরহাদ রেজার তালুবন্দি করেই ‘নাগিন নাচ’ শুরু। ঢাকার হাল ধরার চেষ্টা করেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এবং রনি তালুকদার।
১২ বলে ২৫ রান করা সাকিব আল হাসানকে ফরহাদ রেজা বোল্ড করে দিলে ভাঙে ৫২ রানের জুটি। ক্যারিবীয় হার্ডহিটার আন্দ্রে রাসেল জ্বলে উঠতে পারেননি। ৮ বলে ১৪ রানে ঝড়ের আভাস দিলেও তা থামিয়ে দেন রংপুর আধিনায়ক মাশরাফি। তিন নম্বরে নামা রনি তালুকদার ২৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন। শফিউলের শিকার হওয়ার আগে ৩২ বলে ৫২ রানের ইনিংসে হাঁকান ৬ চার ১ ছক্কা। সীমানা থেকে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন অ্যালেক্স হেলস। শুভাগত হোমের (১) অফ স্টাম্প উড়ে যায় শহীদুলের পেসে। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ঢাকা ডায়নামাইটসের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ১৮৬ রান। ২৩ বলে ৩৭ রানে অপরাজিত খানে কায়রন পোলার্ড।
উল্লেখ্য, জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা খুলনা টাইটান্সকে ৮০ রানে হারিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। কুমিল্লার হয়ে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করেন এভিন লুইস আর বল হাতে হ্যাটট্রিক করেন ওয়াহাব রিয়াজ। চলতি বিপিএলে এটা চতুর্থ সেঞ্চুরি এবং দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক।
খবর/কালের কণ্ঠ অনলাইন