নিজস্ব প্রতিবেদক: সখীপুর উপজেলার ১নম্বর কাকড়াজান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আগামী ১১ নভেম্বর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ওই ইউনিয়নে গত ১০ অক্টোবর আওয়ামী লীগ মনোনীত দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। এদিকে কেন্দ্র থেকে দলীয়
প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হলেও এলাকার সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। শুক্র ও শনিবার (১৫ ও ১৬ অক্টোবর) দুই দিনে ওই ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ড, গ্রাম ও হাট-বাজারে সরেজমিন গেলে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার বিষয়টির সত্যতা মেলে। ওই ইউনিয়নের সাপিয়ারচালা, হারিঙ্গাচালা, শ্রীপুর রাজনীতিমোড়, ইন্দারজানি, খুংগারচালা, ভাতগড়া, গড়বাড়ি, গোবরচাকা, কাজীরামপুর, হামিদপুর, বৈলারপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম, পাড়ামহল্লা ও হাট-বাজারে সাধারণ ভোটারদের মতামত পাওয়া যায়।
তারা জানিয়েছে, কেন্দ্র থেকে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হলেও তাদের প্রত্যাশিত প্রার্থী

দুলাল হোসেনের নাম আসেনি। মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে ওই ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম বিদ্যুৎকে। যা তাদের পছন্দ হয়নি। প্রত্যাশিত বা পছন্দের প্রার্থী
ভোটের মাঠে না এলে অনেকে কেন্দ্রে ভোট দিতে যাবেন না বলেও মন্তব্য করেছেন।
তারা অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, দুলাল হোসেন একজন সহজ-সরল ও সাদাসিধে মানুষ। ঘুষ, দুর্নীতি করেন না। প্রায় চার যুগ ধরে এলাকার মানুষের সঙ্গে তার নিবিড় সম্পর্ক। মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। মাঠ পর্যায়ে তার আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা। এর আগে তাকে তিনবার ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী করেছে সাধারণ মানুষ ও ভোটাররা। বিগত নির্বানগুলোতে দুলাল হোসেনকে বিভিন্ন গ্রামের কৃষক, মজুর, ভ্যানচালক, শ্রমিকসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ নির্বাচনী খরচ হিসেবে নগদ অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। কতটা জনপ্রিয়তা বা সাধারণ মানুষের কাছে ভালোবাসায় পরিণত হলে এমনটি করতে পারে ভাবনার বিষয়। কিন্তু প্রভাব খাটিয়ে অন্যরা বিজয়ী হয়েছে। তার সততা, নিষ্ঠাবান ও উদারতায় মুগ্ব এলাকার মানুষ। তিনি এলাকার বহু পুরোনো গ্রাম্য বিরোধ অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে মীমাংসা করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এলাকার যেকোনো বিচার সালিশে তার ডাক পড়ে। সকলেই সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তার চৌকস বিচার সালিশের সুষ্ঠু সমাধানে। এবারের নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু দল এলাকায় সাধারণ ভোটারদের মধ্যে কোন প্রার্থীর জনপ্রিয়তা কতটুকু এর যাচাই-বাছাই না করে দলীয় প্রার্থী নির্বাচন করেছে। তাদের ভাষ্যমতে, দুলাল হোসেন একজন ত্যাগী, ব্যক্তি জীবনে তিনি অত্যন্ত সাদামাটা কিন্তু তার রয়েছে ক্লিন ইমেজের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার। জনগণের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য রাজনীতি করেন, নিজের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য নয়। অনেকেই ক্ষমতা পেয়ে বেপরোয়া হয়ে যায়। তিনি সৎ ও ভালো মানুষ। সুখে-দুঃখে মানুষের পাশে থাকেন, দলের পাশে থাকেন।
এ প্রতিনিধিকে শ্রীপুর রাজনীতিমোড় এলাকার ব্যবসায়ী আয়নাল হক বলেন, তার পছন্দের প্রার্থী দুলাল হোসেন মনোনয়ন না পাওয়ায় তিনি কেন্দ্রে ভোট দিতেই যাবেন না। তার মতো ওই এলাকার অনেক ভোটাররা এমন মন্তব্য করেছেন। খুংগারচালা গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি শাবদুল মিয়া বলেছেন, গত নির্বাচনে তিনি দুলাল হোসেনকে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেছিলেন। তার মতো আরও অনেকে নগদ অর্থ দিয়েছিলেন এ প্রতিনিধিকে বলেছেন। ইন্দারজানি গ্রামের বাদল মিয়া, ভাতগড়া গ্রামের দেওয়ান একাব্বর, গোবরচাকা গ্রামের দেলুয়ার হোসেন, গড়বাড়ি গ্রামের তুলা মিয়া, কাজীরামপুর গ্রামের আবদুল করিম, বৈলারপুর গ্রামের পল্লিচিকিৎসক শামসুল হকসহ বিভিন্ন গ্রামের অসংখ্য মানুষ এ প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপে তাদের পছন্দের দুলাল হোসেনের কথা বলেছেন। বেশ কয়েকটি হাট-বাজারের চাস্টলে এ প্রতিনিধি গেলে সাধারণ ভোটাররা ঘিরে ধরে তাদের পছন্দের প্রার্থী
দুলাল হোসেনের কথা বলেছেন। ওই ইউনিয়নের সিংহভাগ ভোটারদের পছন্দের প্রার্থী দুলাল হোসেন। যা এলাকার মানুষের কাছে না গেলে কেউ বুঝবেনা। দলমত নির্বশেষে একজন মানুষ এত জনপ্রিয় হতে পারে কাকড়াজান ইউনিয়নের পরতে পরতে তার প্রমাণ মিলেছে। সত্যিই অবাক করার বিষয়। বহুগুণে এমনটি হয়েছে দুলাল হোসেনের। হয়তো যারা এই প্রতিবেদনটি পড়বেন তারাও নানা মত প্রকাশ করতে পারেন। কিন্তু যঁারা সাধারণ ভোটার; চোখের আড়ালেই থেকে যাবে তাঁদের এই অনুভূতির কথা। কিন্তু বুঝতে হবে তাদেরও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে; তাদেরও পছন্দ আছে; তাদেরও ঘ্রাণ শক্তির দারুণ অনুভূতি আছে।
এ প্রসঙ্গে দুলাল হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তিনি সব সময় বুকে ধারণ ও লালন করেন। তিনি বড় নেতা না হলেও বঙ্গবন্ধুর এ আদর্শই তার রাজনীতি। এ দলের নিবেদিত একজনকর্মী হিসেবে গর্ববোধ করেন তিনি। তিনি জানান, আমার প্রতি এলাকার সাধারণ মানুষের যে ভালোবাসা কোনো কিছুর বিনিময়েও এর ঋণ শোধ করতে পারবোনা। তাদের ভালোবাসার স্বীকৃতি স্বরূপ প্রতিটি নির্বাচনী খরচ হিসেবে নগদ অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। আমার অর্থকড়ি নেই। বারবার তাদের অনুপ্রেরণায় প্রার্থী হওয়া। জীবনে যদি তাদের জনপ্রতিনিধি হয়ে সেবা করে যেতে পারতাম; হয়তো মরে শান্তি পেতাম। না হয় মরেও শান্তি পাবোনা; সাধারণ মানুষের ভালোবাসার প্রতিদান দিতে না পারা তাকে প্রতিনিয়ত ব্যথিত করছে।

