নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলের সখীপুরে অফিসে ঢুকে এশিয়ান টেলিভিশনের স্থানীয় প্রতিনিধি এম. সাইফুল ইসলাম শাফলুর উপর হামলা চালিয়েছে এক আওয়ামী লীগ নেতা। টেলিভিশনের বুমের (মাইক্রোফোন) আঘাতে ওই সাংবাদিকের মাথা ফেটে গেছে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদ সড়কের মনির উদ্দিন প্লাজায় এ ঘটনা ঘটে। শাফলু বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হামলাকারী আওয়ামী লীগ নেতার নাম মনির উদ্দিন মন্টু। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সখীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। এ ঘটনায় আহত সাংবাদিকের স্ত্রী রিতা আক্তার বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পরে অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে মনির উদ্দিন মন্টুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।


অভিযোগ, প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাংবাদিক শাফলু দীর্ঘদিন ধরে মনির উদ্দিন প্লাজার নিচতলার একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে নিজের সম্পাদিত নিউজ পোর্টাল “নিউজ টাঙ্গাইল” -এর অফিস পরিচালনা করেন। সোমবার ওই কক্ষটির ভাড়ার চুক্তিপত্র নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ভবন মালিক মনির উদ্দিন মন্টু অফিস কক্ষে ঢুকে টেলিভিশনের বুম (মাইক্রোফোন) দিয়ে সাজোরে সাংবাদিক শাফলুর মাথায় আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই সাংবাদিক শাফলু জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে স্থানীয়রা তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও সখীপুর উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকেরা আহত সাংবাদিক শাফলুকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান। দুপুরে সখীপুর প্রেসক্লাবে এক জরুরী সভায় হামলাকারীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মনির উদ্দিন প্লাজার এক ভাড়াটিয়া জানান, এ ভবনের মালিক একজন বদ মেজাজি মানুষ। আগে তিনি আদম ব্যবসায়ী ছিলেন, তাঁর আচরণ অত্যন্ত বাজে। তাঁর বিচার হওয়া প্রয়োজন।
প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে অভিযুক্ত মনির উদ্দিন মন্টু বলেন, আমি তাঁর ওপর হামলা করিনি, বরং ওই সাংবাদিক টিভির বুম দিয়ে আমাকে আঘাত করেছে। একপর্যায়ে কিভাবে তাঁর মাথা কেটে গেলো আমি তা জানি না। মূলত আমি তাঁকে ভাড়ার চুক্তিপত্র নিজের নামে করে নিতে তাগাদা দিচ্ছিলাম। কিন্তু সে আমার কথার কোনো গুরুত্বই দিচ্ছিলো না।
সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ শাহিনুর রহমান বলেন, ভবন মালিক বীর মুক্তিযোদ্ধা মনির উদ্দিন মন্টুকে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়। পরে অভিযোগটি মামলা হিসেবে নিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ হোসেন পাটওয়ারী বলেন, বিষয়টি ডিসি-এসপি পর্যন্ত অবগত হয়েছেন। আহত সাংবাদিকের চিকিৎসার খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে, তাঁকে আইনগতভাবে সব রকমের সহযোগিতা দেওয়া হবে।