নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলের সখীপুরে সুরীরচালা আব্দুল হামিদ চৌধুরী উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রধান শিক্ষক কফিল উদ্দিনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করছে এলাকাবাসী। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার সুরীরচালা (এবাদত নগর) এলাকায় বিদ্যালয় মাঠে এ কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধনে বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য, শিক্ষার্থীসহ প্রায় দুই শতাধিক এলাকাবাসী অংশ নেন। বক্তারা প্রধান শিক্ষকের নানান অপকর্ম ও অনিয়মের কথা তুলে ধরে তাঁর অপসারণ দাবি করেন। এ নিয়ে লিখিত অভিযোগও করেছেন বিভিন্ন দপ্তরে।

নবনির্বাচিত অভিভাবক সদস্য, এলাকাবাসী ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ এপ্রিল ওই বিদ্যালয়ের ১১৯ জন ভোটার প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে পাঁচজনকে সাধারণ অভিভাবক সদস্য নির্বাচিত করেন। পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক কফিল উদ্দিন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচনের জন্যে ৮ এপ্রিল সভা আহ্বান করেন। ওই সভায় পাঁচজন অভিভাবক সদস্য ও তিনজন শিক্ষক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। এ সময় কণ্ঠভোটে শিক্ষক প্রতিনিধিরা নীরব থাকলেও পাঁচজন অভিভাবক সদস্যের ভোটে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সাঈদ আজাদ সভাপতি নির্বাচিত হন। নিয়ম অনুযায়ী ওই সভার কার্যবিবরণী অনুমোদন করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিক্ষা বোর্ডে প্রেরণ করবেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক কফিল উদ্দিন নিয়ম না মেনে অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষাবোর্ডে এডহক কমিটির আবেদন করেছেন।
মানববন্ধনে অভিভাবক সদস্য ও স্থানীয়রা দাবি করেন- প্রধান শিক্ষক কফিল উদ্দিন এবং ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনের প্রিজাইটিং কর্মকর্তা ও একাডেমিক সুপারভাইজার আনোয়ার হোসেন পরস্পর যোগসাজশ-কুপরামর্শে নির্বাচিত সভাপতিকে বাদ দিয়ে এডহক কমিটির আবেদন করছেন। যা সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত ও বেআইনি।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য রুহুল আমিন ও নবনির্বাচিত অভিভাবক সদস্য মঞ্জুর মোর্শেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই প্রধান শিক্ষক কফিল উদ্দিন বিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অপকর্মের কারণে এর আগেও একবার বহিষ্কার হয়েছিলেন। সম্প্রতি তিনি কাউকে কিছু না বলে বিদ্যালয়ে প্রাঙ্গণের মূল্যবান গাছ বিক্রি করে দিয়েছেন। এসব অপকর্ম ঢাকতে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচন করতে চান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক কফিল উদ্দিন বলেন, অভিভাবক সদস্যদের বিশৃঙ্খলার কারণে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা সভাপতি নির্বাচন না করেই চলে যান। সময় স্বল্পতার কারণে এডহক কমিটির আবেদন করা হয়। ইতিমধ্যে শিক্ষাবোর্ড ওই আবেদন গ্রহণও করেছেন। তাই এখন আর নির্বাচন করা সম্ভব নয়।
প্রিজাইটিং কর্মকর্তা ও একাডেমিক সুপারভাইজার আনোয়ার হোসেন বলেন, অভিভাবক সদস্য নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়। কিন্তু শিক্ষক প্রতিনিধি ও অভিভাবক সদস্যরা সমঝোতায় আসতে না পারায় সভাপতি নির্বাচন-নির্ধারণ সম্ভব হয়নি। পরে সাতদিন অতিবাহিত হওয়ায় এডহক কমিটির আবেদন করা হয়েছে। সব নিয়ম অনুযায়ীই হচ্ছে। এখানে যোগসাজেশ বা কুপরামর্শের কিছু নেই।