নিজস্ব প্রতিবেদক: সখীপুরে মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির করা সাইবার অপরাধ মামলায় পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম ও তার ভাতিজিসহ তিনজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গত ২৭ মে বৃহস্পতিবার ওই তিন আসামি জামিন চেয়ে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালতের বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সখীপুর পৌরসভার মেয়র আবু হানিফ আজাদ শনিবার এ তথ্য জানান।

এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি সখীপুর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তাহমিনা পারভিন মিনা বাদী হয়ে কাউন্সিলর শফিকুল ইসলামসহ ১৫ জনকে আসামি করে সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সখীপুর পৌরসভা নির্বাচনে ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে শফিকুলের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হাফিজুল ওয়ারেসের পক্ষে প্রচারে অংশ নেন তাহমিনা পারভিন মিনা। এ নিয়ে শফিকুল ও তাঁর সমর্থকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে কাউন্সিলর শফিকুলের নেতৃত্বে একটি বিজয় মিছিল বের করা হয়। নির্বাচনে বিরোধিতা করায় ক্ষুব্ধ শফিকুল ও তার সমর্থকেরা একজন পুরুষকে শাড়ি পরিয়ে তাহমিনা সাজিয়ে এবং একজন নারীকে পুরুষ সাজিয়ে তাহমিনার স্বামী পরিচয়ে মিছিলের অগ্রভাগে দিয়ে উল্লাস প্রকাশ করান। মিছিলকারীরা তাহমিনা পারভীন মিনাকে জড়িয়ে কুরুচিপূর্ণ ও অশালীন স্লোগান দেন। এ সময় মিছিলটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সরাসরি প্রচারও করা হয়। একজন নারীকে নিয়ে এমন অশোভন কর্মকাণ্ডে উপজেলাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরে ৮ ফেব্রুয়ারি তাহমিনা পারভিন মিনা বাদী হয়ে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করেন। মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দিলে আদালত কাউন্সিলরসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলার বাদী তাহমিনা পারভিন মিনা বলেন, নির্বাচনে কাউন্সিলর শফিকুলের প্রতিদ্বন্দ্বি হাফিজুল ওয়ারেস আমার ভাশুরের ছেলে। তার পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় শফিকুল ও তার সমর্থকেরা আমার বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ ও মিথ্যা অপপ্রচার চালায়। আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে সখীপুর থানার উপরিদর্শক (এসআই) মনিরুজ্জামান বলেন, এ মামলায় কাউন্সিলরসহ সব আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল। পরে আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিন আনেন। আগামী ২ জুন পর্যন্ত জামিনের মেয়াদ ছিল। শুনেছি ২৭ মে সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে আসামিরা জামিন চেয়ে আত্মসমর্পণ করেন। কিন্তু আদালত কাউন্সিলরসহ তিন আসামিকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।