নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলের সখীপুরে গাভী, সেলাইমেশিন ও উন্নত কৃষি যন্ত্রপাতি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে অসহায় গৃহিণী এবং কৃষকদের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে। তিনি স্থানীয় টেংরা মাদলা খাল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে সমিতির সদস্যরা আজ মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের ওই সমিতির কার্যালয়ের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেছে। এতে শতাধিক কৃষক ও গৃহিণী অংশ নেয়।

এর আগে গত ১৯ মার্চ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, টাঙ্গাইল জেলা এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী, উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী ও কাকড়াজান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগও করেছেন তারা।
টেংরা মাদলা খাল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির কোষাধক্ষ্য আব্দুল মান্নান শিকদার মানববন্ধনে বলেন, বিদেশী সংস্থা জাইকা’র মাধ্যমে সরকারি ভাবে উন্নত কৃষি যন্ত্রপাতি, সেলাই মিশিন, গাভী ও পাওয়ার টিলার দেওয়া হবে, এর খরচ বাবদ কিছু টাকা লাগে। তাই সমিতির সদস্যদের কাছ থেকে মিথ্যা আশ্বিস দিয়ে ৫০ হাজার, ৩০ হাজার, ২০ হাজার, সর্বনিম্ন ১৫শত টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছে সমিতির সভাপতি রুহুল আমিন। প্রায় তিন বছর হয়ে আসছে কোন সদস্য পাওয়ার টিলার, গাভী কিংবা সেলাই মেশিন কিছুই পায় নাই। এ নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বললে জানায়- ‘এইতো আর কয়ডা দিন পরেই আসবো’। এ নিয়ে সদস্যরা অতিষ্ঠ হয়ে গেছেন। বাড়িতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বিবাদ চলছে।

সমিতির সদস্য গড়বাড়ি গ্রামের আকলিমা আক্তার বলেন, গাভী পাওয়ার আসায় ২০ হাজার টাকা দিছি রুহুল মেম্বারের কাছে। টাকাগুলো সুদি করে দিয়েছি।
সমিতির সদস্য ভূয়াইদ গ্রামের ছাহেরা খাতুন বলেন, প্রায় আট মাস আগে গাভী দেওয়ার কথা বলে রুহুল মেম্বার আমার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিছে। এখন তারে হারিকেন দিয়ছও খুঁইজা পাইনা।
রফিকুল ইসলাম বলেন, পাওয়ারটিলার দেওয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নিছে রুহুল মেম্বার। এখন পাওয়ারটিলারও দেয়না, টাকাও দেয়না।
টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, আব্দুল বারেক শিকদার, আফরোজা আক্তার, ওম্মে হানী, পারভীন আক্তার, আকলিমা আক্তার প্রমুখ।
আব্দুল মান্নান শিকদার আরও জানান, কাকড়াজান ইউনিয়নের আট-নয়টি গ্রামে বোরো চাষের জন্য সেচ প্রকল্পের আওতায় টেংরা মাদলা নামে দুটি খাল খনন করা হয়েছে। সেই খাল খনন, কৃষিযন্ত্রপাতি ও খালের পাশ দিয়ে গাছ রোপন করা বাবদ জাইকা প্রকল্প থেকে ৯৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ আসে। এক বছরের বেশি সময় হলেও এখনো খালের পাশে কোন গাছ রোপন করা হয়নি। সেই টাকাও সভাপতি আত্মসাৎ করেছেন। আমরা এ ঘটনার তদন্ত করে সুষ্ঠ বিচার চাই।
অভিযোগ অস্বীকার করে মো. রুহুল আমিন মেম্বার বলেন, আমার একটা প্রতিপক্ষ আছে আব্দুল মান্নান, সে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা একটি মানববন্ধন করিয়েছে। আমি কারো কাছ থেকে টাকা নেই নাই। খালের পাশ দিয়ে যেখানে গাছ লাগানো প্রয়োজন সেখানে গাছ লাগানো হয়েছে।
কাকড়াজান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. দুলাল হোসেন বলেন, গরু, সেলাই মেশিন এবং পাওয়ারটিলার দেওয়ার কথা বলে রুহুল আমিন মেম্বার নাকি সমিতির সদস্যদের কাছ থেকে টাকা নিছে। এ নিয়ে মেম্বারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন যায়গায় অভিযোগ দেওয়ার একটি অনুলিপি পেয়েছি। এ বিষয় নিয়ে তাকে পরিষদে ডাকা হবে।
–এসবি