32 C
Dhaka
Wednesday, October 8, 2025

সখীপুরে ৮ মাসে ২৪০ জনকে সর্প দংশন, হাসপাতালে নেই অ্যান্টিভেনম

সাইফুল ইসলাম সানি: টাঙ্গাইলের সখীপুরে ৮ মাসে...

সখীপুরে প্রবাসীর বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপা‌টের ঘটনায় থানায় অ‌ভি‌যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলের সখীপুরে ইতালী প্রবাসীর বাড়িঘর...

এ যেন সত্যিকারের আসমানী

জাহিদ হাসান: আসমানীরে দেখতে যদি তোমরা সবে...

সখীপুরে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বন বিভাগের জমি বিক্রির অভিযোগ

সখীপুরকালিয়াসখীপুরে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বন বিভাগের জমি বিক্রির অভিযোগ
জাহিদ হাসান: টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জামাল মিয়ার বিরুদ্ধে সংরক্ষিত সামাজিক বনায়নের প্রায় দেড় একর জমি বেদে সম্প্রদায়ের লোকদের কাছে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বেদে সম্প্রদায়ের লোকদের এনে, নিজের এলাকার স্থানীয় ভোটার করছেন বলেও জানা গেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কালিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড মৌলভীবাজার উত্তরপাড়া টাঙ্গাইলাচালা এলাকায় প্রায় দেড় একর জমি বেদে সম্প্রদায় এর দখলে চলে গেছে। একসময় এই জমিগুলো বনের প্লট ছিল। পুরো এলাকা বনজ এবং ঔষধি গাছে ভরপুর ছিল। কিন্তু এখন বন ধ্বংস করে প্রায় পুরো একটি পাড়া হয়ে গেছে। বেদে সম্প্রদায় ছাড়াও অন্য উপজেলার লোকদের কাছেও চেয়ারম্যান বনের জমি বিক্রি করেছেন বলে জানা গেছে। আর সরকারি সামাজিক বনায়নের এসব জমি মাত্র ২ থেকে ৫ হাজার টাকা শতাংশে বিক্রি করেছেন চেয়ারম্যান জামাল মিয়া।
অভিযোগ রয়েছে, প্রভাব খাটিয়ে তৎকালীন বন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এসব জমি বিক্রি করেন জামাল চেয়ারম্যান। এক্ষেত্রে বিক্রির প্রমাণ সরূপ বেদে সম্প্রদায়ের লোকদেরকে শুধুমাত্র চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর করা নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে একটি কাগজ দেয়া হয়েছে বলে বেদে সম্প্রদায়ের লোকেরা জানিয়েছেন।
বেদে পল্লীর লোকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মোঃ মোস্তফা (২৭), আরফিন আক্তার (২১), হাসি আক্তার (৪০), আরিফা বেগম (২৬) মো: ডালিম মিয়া (৩০), মেঘ মালা আক্তার (৩৩), মো: চঞ্চল (৫০), রবিউল ইসলাম (৫০), আফানুল্লাহ্ (৬০), ফকির চাঁন (৬০), এবং আলেপ মিয়া (৪০)সহ প্রায় ৪০-৫০ জন বেদে সম্প্রদায়ের লোকদেরকে গত কয়েক বছরে টাকার বিনিময়ে সরকারি সংরক্ষিত বনায়নের জমি দিয়ে তাদেরকে ওই এলাকার ভোটার বানিয়েছেন। এসব কাজ চেয়ারম্যান জামাল মিয়া শুধু টাকার জন্যই করছেন? নাকি এর নেপথ্যে অন্য কোনো কারণ লুকিয়ে আছে, বলতে পারছে না কেউ।
স্থানীয়দের অভিযোগ–বেদে সম্প্রদায়ের লোকেরা বনের সাপ, ব্যাং, পাখিসহ বিভিন্ন রকম পশুপাখিই শুধু হত্যা করছেন না, পরিবেশ-প্রকৃতির ক্ষতি করে এমন কাজও প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, ওই এলাকায় মাঝেমধ্যেই চুরিসহ নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। এসবের সাথে বেদে সম্প্রদায়ের লোকেরা জড়িত বলে স্থানীয়রা মনে করছেন।
বেদে পল্লীর ডালিম ইসলাম জানান, আমাদের আদি বাড়ি ঢাকা সাভারে। আমরা চেয়ারম্যানের কাছ থেকে প্রতি শতাংশ মাত্র ২ থেকে ৩ হাজার টাকার বিনিময়ে জমিটা কিনেছি। আমাদের বেদে সম্প্রদায়ের প্রায় ৪০-৫০টি পরিবারের কাছে এরকম জমি বিক্রি করেছেন চেয়ারম্যান জামাল মিয়া।

বেদে সম্প্রদায়ের মোঃ রবিউল ইসলাম জানান, আমরা আসার আগে এখানে সামাজিক বনায়নের প্লট ছিল। জামাল চেয়ারম্যান আমাদের কাছে এ জমি বিক্রি করেছেন। তিনি আমাদেরকে এ এলাকার স্থানীয় ভোটার বানিয়েছেন। আমাদের কেউ কেউ সরকারি বিভিন্ন ভাতাও পাচ্ছেন। আমরা যতদিন বেঁচে আছি এই চেয়ারম্যানকেই ভোট দেব।

তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান জামাল মিয়া বলেন, এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি এগুলোর সাথে জড়িত নই। এ কথা বলে তিনি ফোন কেটে দেন। এরপরে বারবার চেষ্টা করেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিট কর্মকর্তা রুমিউজ্জামান বলেন, কাহারতা মৌজার এমএম চালা বিটের ৩০ নং দাগের জমিগুলো জামাল চেয়ারম্যান ৮ বছর আগে প্রায় দেড় একর সরকারি জমি তিনি জবরদখল করেন। এবিষয়ে তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। যেকোনো সময় যৌথ বাহিনীর সহযোগিতায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বহেড়াতৈল রেঞ্জ কর্মকর্তা এমরান আলী বলেন, আমি এখানে জয়েন করেছি সাত মাস আগে। শুনেছি জামাল চেয়ারম্যান সামাজিক বনায়নের জমি বেদে সম্প্রদায়ের লোকদের কাছে বিক্রি করেছেন। আমরা কয়েক বার উচ্ছেদ অভিযান করতে চেয়েও পারিনি। সাংবাদিকসহ সবার সহযোগিতা পেলে আমরা অবশ্যই উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে বনের জমি উদ্ধার করব।

অন্য জেলার বেদে সম্প্রদায়ের লোকেরা সখীপুরে ভোটার হতে পারেন কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, বেদে সম্প্রদায়ের লোকেরা যেহেতু বাংলাদেশের নাগরিক সুতরাং চেয়ারম্যান যদি তাদেরকে জন্ম সনদ দিয়ে থাকে, তাহলে তারা ওই এলাকার ভোটার হতে পারেন, এতে কোনো সমস্যা নেই।

উপজেলা বনায়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল রনি বলেন, আমার এ বিষয়ে কোনো কিছু জানা নেই। খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ নেব।

Check out our other content

Check out other tags:

Most Popular Articles