27 C
Dhaka
Monday, November 24, 2025

সখীপুরে ভোক্তা অধিকারের অভিযানে চার প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ ৮৫ হাজার টাকা জরিমানা

নিজস্ব সংবাদদাতা: সখীপুরে ভোক্তা অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে...

সখীপুরে ৮ মাসে ২৪০ জনকে সর্প দংশন, হাসপাতালে নেই অ্যান্টিভেনম

সাইফুল ইসলাম সানি: টাঙ্গাইলের সখীপুরে ৮ মাসে...

সখীপুরে প্রবাসীর বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপা‌টের ঘটনায় থানায় অ‌ভি‌যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলের সখীপুরে ইতালী প্রবাসীর বাড়িঘর...

‘মমতার দাওয়াই’ এবার এলো নিজ ঘরেই!

জাতীয়'মমতার দাওয়াই’ এবার এলো নিজ ঘরেই!

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কারও করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হলেই তাঁর মনে সাহস জোগাতে তাঁর বাড়িতে ছুটে যেতেন তিনি। সঙ্গে নিয়ে যেতেন এক ঝুড়ি মৌসুমি ফল। ‘মমতার দাওয়াই’ লেখা সংবলিত ফলের ঝুড়ি। সেই উপহার পেয়ে করোনা শনাক্ত রোগী যেন অর্ধেক ভালো হয়ে যেতেন। এই কাজটি শুরু থেকেই করে আসছেন টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসমাউল হুসনা।
এবার ঘটেছে এর উল্টোটা। গত বৃহস্পতিবার সকালে ইউএনওর স্বামীর দেহে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়। এরপর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এদিন বিকেলে সেই মমতার দাওয়াই নিয়ে ইউএনও বাসায় হাজির হন। তাঁরা পরিবারটির সবাইকে সাহস জুগিয়ে আসেন। প্রতিক্রিয়ায় ইউএনও বললেন, ‘অবশেষে সেই মমতার দাওয়াই আমার ঘরেই ফিরে এল।’

গত ২১ এপ্রিল সখীপুরে প্রথম ঢাকাফেরত কাঁচামাল ব্যবসায়ী রিপন মিয়ার হাত ধরে একই পরিবারের পাঁচজনের করোনা শনাক্ত হয়। সে সময় পরিবারটির প্রতি অসহিষ্ণু হয়ে ওঠেন এলাকার অনেকে। কেউ কেউ ইউএনওকে ফোন দিয়ে পরিবারটিকে শায়েস্তা করারও কথা বলেন। ইউএনও বাড়িটিতে যান ঠিকই, কিন্তু পরিবারটির জন্য মমতার দাওয়াই নিয়ে এবং অসহিষ্ণু লোকজনের মানসিকতা পরিবর্তনের বার্তা নিয়ে। সঙ্গে নিয়ে যান এক ঝুড়ি ফল ও পাঁচ সদস্যের পরিবারের জন্য দুই সপ্তাহের খাদ্যসহায়তা। এলাকাবাসীর মানসিকতার পরিবর্তন ও রোগীদের প্রতি মমত্ববোধ বাড়াতে বাড়ির সামনে একটি ব্যানার টাঙিয়ে দেন। তাতে লেখা ছিল ‘করোনাভাইরাস অতিমাত্রায় ছোঁয়াচে রোগ, কিন্তু মরণব্যাধি নয়। সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব রক্ষা করে রিপন মিয়ার পরিবারকে সুস্থ হতে সহায়তা করুন। রিপন মিয়া কোনো অপরাধী নন, তিনি বৈশ্বিক মহামারির শিকার। আপনারা রোগীর প্রতি মানবিক আচরণ করুন।’এ ছাড়া ইউএনও বাড়ির আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য নেওয়া ফলের ঝুড়িতে একটি চিরকুট রেখে আসেন। তার শিরোনাম ছিল ‘মমতার দাওয়াই’। তাতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে লেখা ছিল ‘মনে সাহস রাখবেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আপনার পাশে আছেন।’

ইউএনও আসমাউল হুসনা গত রোববার তৃতীয়বারের মতো নমুনা দেন। মঙ্গলবার ফলাফল নেগেটিভ আসে। বুধবার তাঁর স্বামীও নমুনা দেন। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর স্বামীর ফলাফল পজিটিভ আসে। এবার ইউএনও নিজেই বিপদে। তাঁকে মমতার দাওয়াই কে দেবেন। কে দেবেন সাহস। হঠাৎ সহকারী কমিশনার (ভূমি) হা-মীম তাবাসসুম ও সখীপুর থানার ওসি আমির হোসেন এক ঝুড়ি ফলমূল নিয়ে হাজির ইউএনওর বাসায়।
এ নিয়ে ইউএনও আসমাউল হুসনা বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর ফেসবুক পেজে একটা স্ট্যাটাস দেন। তিনি লেখেন ‘একটা বিষয় কখনো ভাবিনি যে ‘মমতার দাওয়াই’ আমার ঘরেই ফিরে আসবে!” তাঁর স্বামীর মনে সাহস জোগাতে মমতার দাওয়াই পৌঁছানোর জন্য তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান, এসিল্যান্ড, ওসি ও সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ওসি আমির হোসেন বলেন, উপজেলায় কেউ করোনা শনাক্ত হলেই তাঁর বাড়িতে ছুটে যেতেন তিনি। রোগীকে সাহস দিতে তিনি মমতার দাওয়াই নামে একটি প্যাকেট উপহার দিয়ে আসতেন। আজ তাঁর বাড়িতেই তাঁর স্বামীর করোনা শনাক্ত হয়েছে। তিনি এক সপ্তাহ ধরে বাসা থেকে বের হতে পারছেন না। তাই দায়িত্ববোধ থেকেই তাঁকে সাহস দিতে তিনি ইউএনওর বাসায় গিয়েছেন তাঁর সেই মমতার দাওয়াই নিয়েই।

Check out our other content

Check out other tags:

Most Popular Articles