21 C
Dhaka
Friday, November 21, 2025

সখীপুরে ভোক্তা অধিকারের অভিযানে চার প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ ৮৫ হাজার টাকা জরিমানা

নিজস্ব সংবাদদাতা: সখীপুরে ভোক্তা অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে...

সখীপুরে ৮ মাসে ২৪০ জনকে সর্প দংশন, হাসপাতালে নেই অ্যান্টিভেনম

সাইফুল ইসলাম সানি: টাঙ্গাইলের সখীপুরে ৮ মাসে...

সখীপুরে প্রবাসীর বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপা‌টের ঘটনায় থানায় অ‌ভি‌যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলের সখীপুরে ইতালী প্রবাসীর বাড়িঘর...

সখীপুরে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়, জেলা শিক্ষা অফিসের তদন্ত

বাংলাদেশজাতীয়সখীপুরে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়, জেলা শিক্ষা অফিসের তদন্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার লাঙ্গুলিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকেরা। এরমধ্যে বিদ্যালয়ে বিশেষ ক্লাসের নামে বাধ্যতামূলক কোচিং বাণিজ্য, কোচিং না করলে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না দেওয়া, শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ক্লাস না করানো, ব্যবহারিক পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেওয়ার কথা বলে অর্থ আদায় ও বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নের নামে অর্থ আত্মসাৎ অন্যতম। জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে এলাকাবাসী লিখিতভাবে এসব অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে জেলা শিক্ষা কার্যালয়ের সহকারী পরিদর্শক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান সরেজমিনে তদন্তে আসেন। এ সময় তিনি ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেন।

শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলছেন তদন্ত কর্মকর্তা। -ছবি: সখীপুর বার্তা।

লিখিত অভিযোগ, স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় লাঙ্গুলিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের ৪৭ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। ওইসব শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিশেষ ক্লাস, ফরম পূরণ ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় পাশ করানোর কথা বলে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠে প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা কার্যালয়ে এসব অভিযোগের পর থেকেই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে ওই শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলও করেছে এলাকাবাসী।

ওই বিদ্যালয় থেকে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী সামিউল ইসলাম। তদন্ত কর্মকর্তার কাছে ওই শিক্ষার্থী জানায়, “নির্বাচনী পরীক্ষায় আমি ছয় বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছিলাম। পরে প্রধান শিক্ষক আমার কাছে সাত হাজার ১০০ টাকা দাবি করেন। আমি পাঁচ হাজার টাকা স্যারকে দিলেও আমাকে পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।”
এদিকে একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফরিদ হাসান জানায়, “আমি নির্বাচনী পরীক্ষায় আট বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছিলাম। আমার কাছে প্রধান শিক্ষক নুরুল স্যার ১২ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে আমি দুই ধাপে ১০ হাজার টাকা দিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পেরেছি।”
এ ছাড়া শাহেদ ইয়ামিন, আসিফ, তন্ময়, আলহাজ ও লিমন নামের আরও পাঁচজন শিক্ষার্থী ব্যবহারিক পরীক্ষা বাবদ ৭০০ টাকা করে দেওয়ার কথা তদন্ত কর্মকর্তার কাছে স্বীকার করে।

অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান সকলের সামনেই এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ সত্য নয়। ফরম পূরণ বাবদ কারও কাছ থেকে ২২০০, কারও কাছ থেকে ২৮০০ টাকা নিয়ে সমন্বয় করে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যেও ফরম পূরণ করানো হয়েছে। তবে তিনি ব্যবহারিক পরীক্ষায় পাশ করানোর জন্যে টাকা নেওয়া প্রসঙ্গে ভুল স্বীকার করে বলেন, আমার অনুমতি ছাড়াই এক শিক্ষক ওই টাকা নিয়েছিলেন, পরে ওইসব টাকা সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের ফেরত দিয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে অভিযোগকারী সজল শিকদার বলেন, এই প্রধান শিক্ষক শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে অর্থ আদায়, অনিয়ম-দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত, এটি প্রমাণিত‌। আমরা তাঁর অপসারণ চাই, এটি এখন গ্রামবাসীর প্রাণের দাবি।

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিকদার বলেন, বিষয়টি মীমাংসার জন্য বেশ কয়েকবার বসা হয়েছে। সকলকে নিয়ে বসে বিষয়টি পুনরায় মীমাংসার চেষ্টা করা হবে।

এ বিষয়ে অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা টাঙ্গাইল জেলা শিক্ষা কার্যালয়ের সহকারী পরিদর্শক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, আমি সরেজমিনে এসে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে গেলাম। দুই-একদিনের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন।

উল্লেখ্য, আজ রোববার তদন্তকালে সখীপুর উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম খলিল, সখীপুর পিএম পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাইউম হুসাইন, উদয়ন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান মিয়াসহ ওই বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও স্থানীয় শতাধিক বাসিন্দা উপস্থিত ছিলেন।

Check out our other content

Check out other tags:

Most Popular Articles