নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলের সখীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে হামলার ঘটনায় করা মামলায় আইয়ুব খান নামের এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল (৭ জানুয়ারি) মঙ্গলবার রাতে উপজেলার নলুয়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে মামলার এজাহারে আইয়ুব খানের বয়স লেখা হয়েছে ৩২ বছর, প্রকৃত অর্থে তাঁর বয়স ৭২ বছর।
আইয়ুব খান উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। মামলার এজাহারে ১৩৫ নম্বর আসামি হিসেবে তাঁর নাম রয়েছে। তবে সেখানে নামের আগে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ লেখা না থাকলেও বয়সের ঘরে ৩২ ও বাবার নাম অজ্ঞাতনামা লেখা রয়েছে।
একই মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে গতকাল বিকেলে উপজেলার বহেড়াতৈল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল আমিন সরকারকে (২৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ পর্যন্ত ওই মামলায় ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ৩ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা শৌখিন মোড় থেকে মিছিল নিয়ে সখীপুর পৌর শহরের তালতলা চত্বরে যায়। সেখানে আসামিরা আগে থেকেই পিস্তল, রাইফেল, শটগান, চায়নিজ কুড়াল, রামদা, শাবল নিয়ে প্রস্তুত ছিলেন। পরে মিছিলটি সেখানে পৌঁছালে পরিকল্পিতভাবে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করা হয়। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন।
এ ঘটনার পর গত ২৬ আগস্ট রাতে সখীপুর পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোরশেদুল ইসলাম অন্তর বাদী হয়ে সাবেক এমপি অনুপম শাহজাহানসহ ১৬৭ জনের বিরুদ্ধে সখীপুর থানায় মামলাটি করেন। মামলার এজাহারে ৩ আগস্ট পৌর শহরের তালতলা চত্বর ও উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছিল।
গ্রেপ্তার বীর মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব খানের এক ভাতিজা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে হামলার অভিযোগে করা মামলায় ১৩৫ নম্বর আসামি আমার চাচা নন। কারণ, আমার চাচার বয়স ৩২ নয়, ৭২ বছর। ঘটনার দিন তিনি সখীপুরেই আসেননি। এ ছাড়া পিতার নামও অজ্ঞাত লেখা রয়েছে। শুধু নামের মিল দেখে কাউকে গ্রেপ্তার করা ঠিক নয়।’
কিন্তু ওই এলাকায় খোঁজ নিয়ে আইয়ুব খান নামের আর কাউকে পাওয়া যায়নি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সখীপুর থানার উপপরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম এ প্রসঙ্গে বলেন, আসামি আইয়ুব খান আওয়ামী লীগের যাদবপুর ইউনিয়নের একটি ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি। তদন্তে তাঁকেই পাওয়া গেছে। এজাহারে ভুলবশত আসামির বয়স ৭২–এর স্থলে ৩২ লেখা হয়েছে। আজ বুধবার সকালে দুই আসামিকে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয়েছে।